পাহাড়ি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আগত বিদেশি প্রতিনিধিদের সোমবার। নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিঙের ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি, পাহাড়ি খাবারের সঙ্গে পরিচয় করানো হল জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আসা বিদেশি প্রতিনিধিদের। দার্জিলিং পাহাড়ের পর্যটনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকা বিষয়গুলি তুলে ধরা হল জি২০-ভুক্ত দেশগুলির শতাধিক প্রতিনিধিদের সামনে। সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি প্রতিনিধিরা টয় ট্রেনে চড়ে দার্জিলিং পৌঁছেছেন, হেরিটেজ রাজভবনে ঘুরেছেন, বাতাসিয়া লুপের ইতিহাস জেনেছেন, ম্যাল চৌরাস্তায় পাহাড়ি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছেন। এ দিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজভবনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পর্যটনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। রাজভবনের তত্ত্বাবধানে প্রতিনিধিদের জন্য ছিল বিশেষ ভোজের আয়োজন। সে তালিকায় ছিল পাহাড়ের মোমো, থুকপা, চাউমিন বা শেল রুটি-লাল আলুর দমও।
বিকেলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর চিফ এগজ়িউটিভ অনীত থাপা। তাঁর সঙ্গে দার্জিলিঙের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ভারতের চিফ কো-অর্ডিনেটর হর্ষবর্ধন শ্রীংলা। অনীত এলাকার উন্নয়নের বিদেশের প্রতিনিধিদের অংশীদার হতে আবেদনও করেন। তিনি বলেন, ‘‘জি২০ সম্মেলনের জন্য এই অঞ্চলের পর্যটন এবং চা শিল্প আগামী দিনে লাভবান হবে।’’ তাঁর আশা, ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’ দ্রুত গতি পাবে। তিনি বলেন, ‘‘শীর্ষ সম্মেলনে আগত সবাইকে এলাকার উন্নয়নে শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। হর্ষবর্ধন শ্রীংলা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁদের জন্যই সুন্দর ভাবে শীর্ষ সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে।’’
গত দু’দিনে নিউ চামটা এবং মকাইবাড়ি চা বাগানের চা রিসর্টে সম্মেলন হয়েছে। চা বাগানে ঘোরা, চা তৈরি দেখা থেকে চাঁদের আলোয় পাতা তোলার বন্দোবস্ত করা হয়। ‘বিশ্ব বাংলা’ ব্র্যান্ডের মাধ্যমে রাজ্যের হস্ত ও কুটির শিল্পের সঙ্গে বিদেশিদের পরিচয় করানো হয়েছে। এর বাইরে, আলাদা করে ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’ নিয়ে দু’টি বৈঠক হয়েছে। এই সম্মেলনের ‘ডকুমেন্ট’ তৈরি হয়ে আগামীবৈঠকে যাবে।
এ দিন বিদেশি প্রতিনিধি, অতিথিদের পাহাড়-জঙ্গলের সৌন্দর্য, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসাবে খ্যাত টয় ট্রেন, সর্বোচ্চ উচ্চতার রেলস্টেশন ঘুম, বাতাসিয়া লুপ, ইতিহাস সমৃদ্ধ রাজভবনের সঙ্গে পরিচয় করানো হয়। এর আগেই ঠাকুরবাড়ির খাবারের স্বাদও নিয়েছেন প্রতিনিধিরা। গোটা আয়োজনের সূত্রে আগামী দিনে এই অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন দেশের পরিকল্পনা, চিন্তাভাবনা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ‘জিটিএ’-র তরফে পাহাড়ে সেই আহ্বান করা হয়েছে।
সোমবার রাতে পাহাড় থেকে ফেরার পরে নিউ চামটা চা বাগানে বিশেষ নৈশভোজে সবাই যোগ দেন। সঙ্গীতের অনুষ্ঠানের সঙ্গে আদিবাসী নাচের আয়োজন ছিল। তাতে মাতেন প্রতিনিধিরাও। আজ, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিশেষ বিমানে অতিথিদের দিল্লি রওনা হওয়ার কথা।