আলিপুরদুয়ার শহর থেকে কোচবিহার যেতে কালাজানি নদীর উপরে রেল সেতুতে ফের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। তার পরেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবারের পরে শনিবার। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে কালজানি নদীর রেল-সেতুতে ফের দুর্ঘটনা ঘটল। এ বার ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক বৃ্দ্ধের। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের শোভাগঞ্জের বাসিন্দা মৃত ওই বৃদ্ধের নাম গৌরাঙ্গ নন্দী (৮৫)। শুক্রবার রাতে পথ দুর্ঘটনায় তাঁর এক সম্পর্কিত ভাইয়ের মৃত্যু হয়। তাঁকে শেষ দেখা দেখতেই রেল সেতুর উপর দিয়ে কোচবিহারের খোল্টায় যাচ্ছিলেন তিনি। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, রেল-সেতুর একেবারে শেষ মাথায় ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রেল-সেতুর পাশে অবিলম্বে ফুট ব্রিজ তৈরির দাবিতে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধ এ দিন যখন কালজানি নদীর রেল-সেতুটি পার হচ্ছিলেন, তখন বামনহাট থেকে শিলিগুড়িগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলে আসে। চালক ট্রেনের ব্রেকও কষেন। কিন্তু তার আগেই ট্রেনের ধাক্কায় সেতুর শেষ প্রান্ত থেকে ছিটকে নীচে পড়ে যান বৃদ্ধ এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
বৃদ্ধের ছেলে তাপস বলেন, “শুক্রবার রাতেই কোচবিহারের খোল্টায় বাবার এক তুতো ভাই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। এ দিন সকালে বাবাকে সে খবর জানাই। বাবা বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়েই কাকাকে শেষ দেখা দেখতে বেরিয়ে যান। দুপুরে ফোন পাই, বাবাকে ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে। শুনে, রেল-সেতুতে ছুটে যাই। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ!”
কালজানি নদীর এই রেল-সেতুতে আগেও একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। গত মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র এই সেতু থেকে নদীর জলে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারায়। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “অনেক দিন ধরেই রেল কর্তাদের কাছে আমরা ওই সেতুর পাশে একটি ফুট ব্রিজ করার আর্জি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কাজ হয়নি। দ্রুত ফুট ব্রিজ তৈরি না হলে আন্দোলনে নামব।” আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম বলেন, “আমরাও চাই, এ ধরনের দুর্ঘটনা বন্ধ হোক। এর সমাধান খুঁজতে আধিকারিকদের সঙ্গে এ দিন কথা বলেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”