জমির মামলাতেই গ্রেফতার হলেন নকশালবাড়ির তৃণমূল নেতা আশরাফ আনসারি। নিজস্ব চিত্র।
চিঠি দিয়ে দলের শীর্ষ নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন এলাকায় সরকারি জমি দখলের অভিযোগ। এ বার জমির মামলাতেই গ্রেফতার হলেন নকশালবাড়ির তৃণমূল নেতা আশরাফ আনসারি ওরফে মন্টু। তিনি শিলিগুড়ির নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ এবং হাতিঘিসা অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি। সোমবার হাতিঘিসার সেবদৌল্লায় বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। নকশালবাড়ি ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের তরফে আশরাফ এবং আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে গত ১৯ জুলাই পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। এ দিন গ্রেফতার হন আশরাফ।
এর আগে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক এবং সহ সভাপতি গৌতম গৌস্বামীকে জমি দখলের মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। দল তাঁদের দু’জনকেই বহিষ্কার করে। এ দিন মন্টুর গ্রেফতারির পরেই জমি দুর্নীতিতে আর কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সেবদৌল্লায় আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগ বাড়ছে। সেখানে খতিয়ানভুক্ত জমি ঘুরপথে একের পরে এক পাট্টা করে নেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন স্থানীয়দের একাংশ। সেবদৌল্লায় কয়েক একর সরকারি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল। মন্টুর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। কয়েক দিন আগে ভূমি সংস্কার দফতরের লোকজন সেবদৌল্লার সরকারি জমিতে বোর্ড টাঙাতে গেলে কিছু লোকজন প্রথমে আধিকারিকদের বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তারা মন্টুর ‘লোক’ কি না প্রশ্ন উঠছে। ভুয়ো নথি তৈরি করে দেওয়ার সঙ্গে ভূমি দফতরেরই আধিকারিকদের একাংশ জড়িত কি না সে প্রশ্নও উঠছে।
এই মন্টুই সেবদৌল্লার সরকারি জমি দখলের অভিযোগে ‘নবান্ন’-এ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তে নামেন ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা। পরে তাঁরা নকশালবাড়ি থানায় মন্টু এবং আরও কয়েক জনের নামেই অভিযোগ দায়ের করেন। দার্জিলিং পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, ‘‘এর আগেও ওঁর (মন্টু) বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ ছিল। নতুন করে
অভিযোগ আসায় গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
গ্রেফতারের সময় আশরাফ বলেন, ‘‘আমি নাকি জমির দালাল এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ করেছি বলেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অসুবিধায় পড়ে আমাকে গ্রেফতার করেছেন।’’ দার্জিলিং জেলার সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘নকশালবাড়ির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গ্রেফতার হয়েছে শুনেছি। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি ফিরে খোঁজ নেব।’’ এ দিন রাতে মন্টুর লোকজন দলের হাতিঘিসা অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।