ভার্চুয়াল-সভা: মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারে। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসের দাপটে বিষয়টি কিছুদিন চাপা পড়েছিল। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল মিটিংয়ে সেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ফের তোপ শোনা গেল বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গলায়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ ভার্চুয়াল সভায় অমিত সিএএ’র পক্ষে ফের সওয়াল করেন। তিনি হুঁশিয়ারির সুরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে জানিয়ে দেন, সিএএ’র বিরোধিতা করলে তার ফল ভুগতে হবে। তিনি মমতাকে প্রশ্নের সুরে বলেন, “মতুয়া সম্প্রদায়, নমশূদ্র ও বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষজন আপনার কী ক্ষতি করেছেন?” সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “ভোটবাক্স খুললে বাংলার জনতা আপনাকে রাজনৈতিক শরণার্থী করে দেবে।”
গত লোকসভা নির্বাচনে এনআরসি নিয়ে প্রচার করেই তৃণমূলকে কোণঠাসা করে বিজেপি। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়েও প্রচার শুরু করে বিজেপি। মাসছয়েকের মধ্যেই বিধানসভা উপনির্বাচনে সেই এনআরসি ও ক্যাব নিয়ে পাল্টা প্রচার করে বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলে তৃণমূল। এনআরসি’তে অসমে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ যায়। সেখানে ১৪ লক্ষ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। বাকিরা সংখ্যালঘু। ১৪ লক্ষ মানুষের মধ্যে রাজবংশী ও গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষও আছেন।
সেই পরিসংখ্যানকে সামনে রেখেই বিজেপিকে তোপ দাগেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ওই প্রচারের জোরেই কালিয়াগঞ্জের মতো আসনে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে জয়ী হয় তৃণমূল। অথচ লোকসভায় ওই আসনেই ৫৬ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এর পরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হয়। তা নিয়ে জোরকদমে ময়দানে নেমে পড়ে বিজেপি। শরণার্থীদের সকলেই নাগরিকত্ব পাবেন, এই প্রচারকেই সামনে রাখে বিজেপি। তা নিয়ে রাজনীতির ময়দান উত্তপ্ত হতে না হতেই করোনার প্রকোপ শুরু হয়। স্তিমিত হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপানউতোর।
এ দিন অমিতের বক্তব্যের পরে নতুন করে সিএএ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে। অমিত এ দিন আরও বলেন, “এ রাজ্যে লকডাউনের সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে সবচেয়ে কম ট্রেন নিয়েছে। শ্রমিক স্পেশালকে করোনা এক্সপ্রেস বলে পরিযায়ী শ্রমিকদের অসম্মান করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ট্রেনে চড়েই তৃণমুল এ রাজ্যের বাইরে চলে যাবে।”
তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ ঊন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “১০ কোটি মানুষকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহ তাঁদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চাইছেন। অসমের মতো করতে চাইছেন। দুর্যোগে রাজ্যের পাশে দাড়ায়নি কেন্দ্র। তিনি করোনার বিরুদ্ধে না নেমে বাংলার বিরুদ্ধে নেমেছেন।”