ফাইল চিত্র।
আসন্ন পুরসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কোনও ব্যক্তির নামে প্রচার নয়— জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের দার্জিলিং সমতলের চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তী। সম্প্রতি কলকাতায় দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করার পর শিলিগুড়ি ফিরেছেন অলোক। তিনি জানাচ্ছেন, স্থানীয় স্তরে পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে রাজ্য সরকারের প্রকল্পকে সামনে রেখেই পুরসভার প্রচার হবে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচার হবে না। তবে পুরভোট নিয়ে জোটবদ্ধ ভাবে তৃণমূল কবে সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করবে, তা স্পষ্ট নয়।
অলোক চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘শিলিগুড়িতে আমাদের বদনাম ঘোচানোর লক্ষ্যটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। কোনও ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচার নয়, উন্নয়নের কাজের নিরিখে মানুষের কাছে ভোট চাওয়া হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের কথা মাথায় রেখে গ্রামীণ এলাকায় দলের অঞ্চল সম্মেলন, বৈঠক কমবেশি শুরু হলেও শহরে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু ওয়ার্ডে বৈঠক হলেও সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ তা নয়। জেলা কমিটির হাতে গোনা পদাধিকারী ছাড়া তিনটি টাউন কমিটির ঘোষিত সভাধিপতিরা কাজ করছেন। গত অগস্ট থেকে জেলা কমিটি, টাউন কমিটি বা ব্লক কমিটি ঘোষণা হয়নি। সার্বিকভাবে একযোগে বৈঠক বলতে পুজোর পর কতগুলি বিজয়া সম্মিলনী হয়েছে মাত্র।
বিজেপি, বামফ্রন্টের মতো দলগুলি যখন পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে, তখন শাসকদল অনেকটাই পিছনে বলে দলের নেতারাই মনে করছেন। বিজেপি ভোটের নানা কমিটিও গঠন করে ফেলেছে। সেখানে তৃণমূলের হয়ে পিকের টিম ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রার্থী খোঁজা এবং অসন্তোষ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। বহু ওয়ার্ডে একাধিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। জেলা স্তরের নেতাদের নিয়ে কোনও কমিটি না করায় তাঁরাও ক্ষুব্ধ। আবার কলকাতা থেকে পুরভোট আসন্ন বললেও দলের জেলাস্তরে বৈঠক, সেমিনার, কর্মিস্তরের কর্মশালা কিছুই শুরু হয়নি বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে দলের কয়েক জন নেতানেত্রী ভোটে টিকিট পাবেন ধরে নিয়ে দলের বদলে শুধুমাত্র নিজেদের প্রচার নেমে পড়েছেন বলে অভিযোগ। একধারে শহরে নাগরিক পরিষেবা নিয়ে মানুষের অভাব অভিযোগ বাড়ছে, আর দলে মধ্যেই ভোটের প্রস্তুতি শুরু না হওয়ায় অনেক সাধারণ কর্মীরাই হতাশ।
দলের নেতাদের একাংশ জানাছেন, ‘‘ওয়ার্ডে কান পাতলে বিজেপি প্রার্থী, বাম বা কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। সেখানে আমাদের কোনও জায়গাই নেই। আর কেউ কেউ নিজের প্রচারেই নেমে দিন কাটাচ্ছেন। এ ভাবে শিলিগুড়ি কতটা জেতা যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’
জেলা চেয়ারম্যান অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকি। বৈঠক, প্রচার কাজ শুরু হবে। দলের ঘোষিত প্রার্থীর হলে সবাইকে কাজ করতে হবে।’’