স্কুলের মধ্যেই সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধরে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর বিরুদ্ধে৷ স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কম থাকায় ওই কর্মী না কি ক্লাসও নিতেন। একই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মেয়েটির বাড়ির লোকের দাবি, ঘটনাটি দেখা সত্ত্বেও ওই কর্মীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি প্রধান শিক্ষক৷ ঘটনায় আতঙ্কিত ওই ছাত্রী আর স্কুলে যেতে চাইছে না বলে জানিয়েছেন তার বাড়ির লোকেরা৷ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পলাতক৷ তার খোঁজে তল্লাশি চলছে৷
জলপাইগুড়ি পাতকাটা কলোনি এলাকার ঘটনা। স্থানীয় একটি জুনিয়র হাই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে সে৷ ছাত্রীর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নীলমণি দাস অনেক দিন ধরেই স্কুলের মধ্যে ওই ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহ করছিল৷ সেই ভয়ে ওই ছাত্রী মাঝখানে অনেক দিন স্কুলেও যায়নি৷ কিন্তু তখনও তার বাড়ির লোকেরা আসল কারণ বুঝতে পারেননি৷
ছাত্রীর মা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার টিফিনের পর নীলমণি তাঁর মেয়েকে জোর করে স্কুলের শৌচালয়ে নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহ করে৷ ওই দিনই নীলমণি দাসের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় অভিযোগ করেন ছাত্রীর বাড়ির লোকেরা৷ সেখানে তাঁরা এ-ও অভিযোগ করেন, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সমীর মজুমদার সব জানলেও প্রতিবাদ করেননি৷
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হলেও স্কুলে নিয়মিত ক্লাস নিত নীলমণি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পরিবেশ বিদ্যা ও সপ্তম শ্রেণিতে সংস্কৃতের ক্লাস নিত সে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সমীরবাবু বলেন, স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা অত্যন্ত কম। সে জন্যই একটা-দুটো ক্লাস নিত সে৷ সমীরবাবুর কথায়, ‘‘ওই ছাত্রী বেশ কিছু দিন স্কুলে আসেনি৷ তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলেছিল, বাড়িতে সমস্যা রয়েছে৷ কিন্তু ওর সঙ্গে এত বড় ঘটনা ঘটেছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি আমরা৷’’ সব অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে নীলমণির বাড়িতে পুলিশ যায়। তখনই বিষয়টি জানতে পারি।’’
স্কুলের আর এক জন শিক্ষক কৌশিক দাস বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটায় সপ্তম শ্রেণির ক্লাস শেষ হয়৷ ওই ছাত্রী সেখানে উপস্থিত ছিল৷ কিন্তু আমাদের কিছু জানায়নি৷’’ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি৷ অভিযুক্তের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে৷’’