প্রতীকী ছবি
ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তে ভূটান থেকে আসা বালি-পাথরের ট্রাকেই নয়, এলাকার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এ বার পর্যটকদের কাছেও তোলাবাজির অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে ফুলবাড়ির ওই ঘটনায় পর্যটন সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে তিন যুবক গ্রেফতার হলেও ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক কাটছে না। ব্যবসায়ীদের ইঙ্গিত, এই ঘটনায় অভিযোগ হয়েছে বলেই সামনে এসেছে। পুজোর আগে এবং পরে ফুলবাড়ি সীমান্তে একাধিক এরকম ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলির কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে সিকিমের দ্বার খুলে যাওয়ার পর পর্যটক আগের চেয়ে বেড়েছে। এই সময় এরকম ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যটনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই দাবি তাঁদের। এ রকম ‘অসভ্যতা’ কড়া হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।
পর্যটন ব্যবসায়ী তুষার ঘোষের দাবি, সমস্ত নথি ঠিক থাকা সত্ত্বেও ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশী পর্যটকদের গাড়িতে আনার সময় তিন যুবক তাদের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেন। তা জুলুমের পর্যায়ে গেলে পর্যটন সংস্থা এনজেপি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। শনিবার ওই ঘটনার পর রাতে আলিমুদ্দিন মহম্মদ, জাহাঙ্গির আলম এবং আসিফ আলম নামে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বাড়ি বদলাগছ এলাকায় কিন্তু কাদের মদতে এই সিন্ডিকেট এলাকায় চলছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুজোর সময় এ সব বাড়ে। আমরা নজর রেখে চলেছি। তবে আগের থেকে খুব কমই এরকম অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’’ এদের সঙ্গে এলাকার কোনও রাজনৈতিক নেতার যোগাযোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এর আগে ভূটান থেকে অতিরিক্ত বালি পাথর নিয়ে ট্রাককে বেআইনি ভাবে আগে সীমান্তে পৌঁছে দিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইয়ের জেরে বেশ কিছু দিন ব্যবসা মার খেয়েছে বলে দাবি এখানকার ট্রাক মালিকদের। তার জেরে বেশ কিছু টাকা ক্ষতিও হয়েছে। এ বার পর্যটনের উপরে এরকম তোলাবাজির অভিযোগে স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের তরফেও পুলিশ কমিশনার এবং পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সিকিম বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে খুলে গিয়েছে। এরকম সময় যদি এ সব অভিযোগ উঠতে শুরু করে তা হলে এখানকার পর্যটন সংস্থাগুলি নিঃসন্দেহে ব্যবসা হারাতে পারে এবং বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে একটা নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে।’’
ফুলবাড়ি এলাকা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের নির্বাচনকেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। গৌতম দেব বলেন, ‘‘আমি ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। এই ধরনের কোনও বেয়াদপি পর্যটকদের প্রতি সহ্য করা হবে না।’’