প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক পদে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে জলপাইগুড়িতে৷ বিরোধীরা ইতিমধ্যেই এই নিয়োগ নিয়ে স্বজন পোষণের অভিযোগ তুলে সরব হতে শুরু করেছেন৷ যদিও তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব কিংবা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কর্তারা স্বজনপোষণের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন৷
এ মাসের গোড়ায় জলপাইগুড়িতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সিলিং শুরু হয়৷ যা এখনও চলছে৷ এখনও পর্যন্ত কাউন্সিলিং-এর পর যাদের চাকরি হয়েছে, সেই তালিকাতে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ঘনিষ্ঠরা রয়েছেন৷ যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, যারা চাকরি পেয়েছেন তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই পেয়েছেন৷
এই মুহূর্তে চলা প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে তৃণমূলের ময়নাগুড়ি ব্লক ২-এর সভাপতি শশাঙ্ক বসুনিয়ার ছেলে ও এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া চাকরী পেয়েছেন৷ যা অস্বীকার করেননি শশাংকবাবু নিজেও৷ কিন্তু এর মধ্যে চর্চা বা গুঞ্জনের কিছু খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি৷ তার কথায়, “আমার ছেলে ও ভাইপোর মেয়ের চাকরি হয়েছে৷ এবং দুজনেরই চাকরি হয়েছে মেধার ভিত্তিতে৷ রাজ্য সরকার তো আগেই ঘোষণা করেছে, মেধার ভিত্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ হবে৷ তাই মেধা থাকলে কি আমার পরিবারের কেউ চাকরি পেতে পারে না?’’
একই কথা বলছেন তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি দুলাল দেবনাথ৷ প্রাথমিকে তারও ঘনিষ্ঠ একজনের চাকরি হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনদিন অনৈতিক কোনও কাজ করিনি, করবও না৷ আমার ঘনিষ্ঠ কারও চাকরি হয়ে থাকলে যোগ্যতার বিচারেই হয়েছে৷ যে কেউ আরটিআই করেও জেনে নিতে পারেন৷’’
তবে বিরোধীরা কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছে৷ ডিওয়াইএফআই-এর জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, এ বারে প্রাথমিকে নিয়োগে প্রক্রিয়ায় গোড়া থেকেই দুর্নীতির গন্ধ৷ আর নিয়োগপত্র বিলি শুরু হতেই শুনতে পাচ্ছি শাসকদলের অনেক নেতার পরিবারের লোকেদের চাকরি হচ্ছে৷ আমরা তার একটা তালিকা তৈরি করছি৷ তালিকা তৈরি শেষ হলেই আন্দোলনে নামব৷’’ সিপিএমের ময়নাগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণকুমার ঘোষ আবার বলেন, ‘‘স্বজন-পোষণ ছাড়াও এ বারে প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতিও হয়েছে৷’’
এ ধরনের অভিযোগের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই দেখছে শাসক শিবির৷ তৃণমূল নেতা জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায় বলেন, ‘‘প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাটা রাজ্য পর্যায়ে হয়েছে৷ যা পুরোপুরি স্বচ্ছ ভাবেই হয়েছে৷ অথচ, রাজ্য সরকারের এমন একটা ভাল উদ্যোগকে কালিমালিপ্ত করতেই কেউ কেউ শাসকদলের নেতাদের পরিবারের কারো কারো চাকরির উদাহরণ তুলে স্বজন-পোষণের অভিযোগ করছেন৷ বাকি প্রার্থীদের মতই তাঁরাও যোগ্যতা অনুযায়ীই চাকরি পেয়েছেন৷’’