কোচবিহার হাসপাতালে এক বিজেপি কর্মী। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির বাইক মিছিলে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার চিলকিরহাটে। ঘটনায় বিজেপির যুব মোর্চার টাউন মন্ডল কমিটির সভাপতি শুভ্র কর-সহ ১০ জন জখম হয়েছে বলে অভিযোগ। এঁদের মধ্যে তিন জনকে কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তৃণমূল অবশ্য ওই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশও বোমা ছোড়ার ঘটনার কথা তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছে। পুলিশের পাল্টা দাবি, কোনও অনুমতি না নিয়ে বিজেপি বাইক মিছিল বের করে। ওই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কিছু বাইকও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “কোনওরকম অনুমতি ছাড়া এদিন বাইক মিছিল বের করা হয়। ওই ঘটনায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হবে।’’
বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিন প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকা থেকে আলাদা আলাদা ভাবে বাইক মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। তা নিয়ে উত্তেজনা ছিল সর্বত্র। অভিযোগ, তার মধ্যে মাথাভাঙা ও কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভায় সরাসরি তৃণমূলের বাধার মুখে পড়তে হয় বিজেপি কর্মীদের। বিজেপি কর্মীরা জানান, তাঁদের খুটামারা সেতুর কাছে জমায়েত হয়ে সেখান থেকে বাইক মিছিল বের করে একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত পরিক্রমার পরে তা শহরে ঢোকার কথা ছিল। মিছিল শুরুর আগেই মোরাঙ্গাবাড়িতে তাঁদের সমর্থকদের আটক করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় নকুল মোদক ও শ্যামল সরকার নামে দু’জন জখম হয়। এর পরে খুটামারা থেকে মিছিল বের হয়ে চিলকিরহাট বাজারে গেলে তাঁদের উপরে ফের হামলা হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি কর্মীরা দাবি করেন, কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে তৃণমূল সমর্থকরা একের পর এক বোমা ছুড়তে থাকে। গোটা বাজার নিমেষে বন্ধ হয়ে যায়। বিজেপি কর্মীরা বাইক ফেলেই সেখান থেকে পালাতে শুরু করে। সাধারণ মানুষও আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মাথাভাঙার শনিমন্দিরের কাছেও বিজেপির দুটি বাইক আটকে পাঁচ জনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এ ছাড়া শীতলখুচি থেকে বিজেপির একটি মিছিল মাথাভাঙায় যাওয়ার পথে ধরলা সেতুর কাছে পুলিশ পথ আটকে দেয়। সেখান থেকে ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা অভিযোগ করেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল বের করেন। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সামনেই বিজেপি কর্মীদের উপরে তৃণমূল হামলা চালায়। তিনি বলেন, “বহু জায়গায় আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা হয়েছে। অনেকেই হাসপাতালে রয়েছেন। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় কোথাও কোনও অনুমতি ছাড়া মিছিল বের করে বিজেপি উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। মানুষ এর জবাব দেবে।”