দুর্নীতির অভিযোগে গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানকে সাসপেন্ড করল প্রশাসন। শুধু বিরোধীরাই নন, দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল সদস্যরাও। মালদহের চাঁচল-২ ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই প্রধান রাস্তার কাজ না করেই পাঁচ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর প্রধানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে উপপ্রধানকে ওই পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সব খতিয়ে দেখে প্রধানের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হতে পারে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন প্রধান।
চাঁচল-২ ব্লকের বিডিও মুনমুন ঘোষ বলেন, ‘‘চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্তে সব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ আসনের ওই পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ১৫ ও সিপিএমের ৫টি আসন ছিল। কিন্তু সাত কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সিপিএম সদস্যদের সমর্থনে কংগ্রেসের প্রধানকে সরিয়ে পঞ্চায়েতের দখল নেয় তৃণমূল। প্রধান হন পলি প্রামাণিক।
অভিযোগ, প্রধান পদ পাওয়ার পর বিরোধীদের তো বটেই, দলীয় সদস্যদেরও পলিদেবী পরোয়া করতেন না। সম্প্রতি কানাইপুর ও ভবানীপুর এলাকায় ছ’টি গ্রামীণ রাস্তার প্রকল্প তৈরি হয়। বরাদ্দ হয় পাঁচ লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু প্রধান গোপনে টেন্ডার ডেকে খাতায় কলমে তা ঠিকাদারকে দেন। তারপর কাজ না করেই ওই টাকা তিনি তুলে নেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি সদস্যদের নজরে আসতেই তৃণমূলের দলীয় সদস্য সহ বাকি ১৯ সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। তারপর তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার প্রধানকে সাসপেন্ড করে প্রশাসন।
প্রধান পলি প্রামাণিক অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমি কোনও দুর্নীতি করিনি। আমার বিরুদ্ধে সবাই মিলে ষড়যন্ত্র করছে।’’ কিন্তু কেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সইদুর রহমান বলেন, ‘‘প্রধান দলের সদস্যদেরও পরোয়া করতেন না। তাকে বারবার সতর্ক করা হলেও তিনি শোনেননি।’’
চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি হবিবুর রহমান বলেন, ‘‘দলে কেউ দুর্নীতি করলে তাকে সমর্থনের প্রশ্নই নেই। কেউ দুর্নীতি করলে শাস্তি তো পেতেই হবে।’’