উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রী মৃত্যুতে যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন সেই প্রশ্নে তোলপাড় বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার সকালে মেসের ঘর থেকে উলের স্কার্ফ দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১২
Share:

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন সেই প্রশ্নে তোলপাড় বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার সকালে মেসের ঘর থেকে উলের স্কার্ফ দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

মেসের তিনতলার যে ঘরে তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী থাকতেন তার দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা যায় না বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। শনিবার সকালে মাটিগাড়া থানার অফিসাররা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের গা ঘেঁষে থাকা ওই মেসবাড়িতে যান। কী ভাবে ঘরের দরজা খুলে দেহ উদ্ধার হল তা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। তখনই তাঁদের নজরে আসে ঘরের এক পাল্লার দরজাটি টেনে দিলে শক্ত হয়ে ফ্রেমে আটকে যায়। তবে বাইরে থেকে জোরে ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায়। তাই বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী ভাবে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে অনেক কিছু পরিষ্কার হবে।’’

Advertisement

শুক্রবার বিকেলে মাটিগাড়া থানায় ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জলপাইগুড়ির বাসিন্দা এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ওই যুবক নিয়মিত ফোন করে ওই ছাত্রীকে হুমকি দিত বলে অভিযোগ। সরস্বতী পুজোর রাতে ক্যাম্পাসে ঢুকেও ওই যুবক হুমকি দেয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তদন্তকারী অফিসারদের একজন বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তেমন কোনও সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হলে খুনের অভিযোগও জুড়ে দেওয়া হবে।’’ মেসের অন্য আবাসিকদেরও এ দিন কয়েক দফায় পুলিশ জেরা করেছে। গত কয়েকদিন তার সঙ্গে কারা দেখা করতে এসেছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গতকালই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিন পুলিশের তরফেও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকের সঙ্গে এ দিন বৈঠকও করেছেন পুলিশ অফিসারেরা। প্রায় ৯০০ একর এলাকা জুড়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছিল চার বছর আগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের নিজস্ব সিসি ক্যামেরা থাকলেও ক্যাম্পাসে সে ব্যবস্থা নেই। ক্যাম্পাসের এক চতুর্থাংশ এলাকায় কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। ওই জমির মালিকানা নিয়ে মামলা রয়েছে। ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়েই বহিরাগতদের অবাধ যাতায়াত। কিছু ক্ষেত্রে পাঁচিল দিতে গেলে আশেপাশের বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেয় বলে দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপনকুমার রক্ষিত বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুত ক্যাম্পাস জুড়ে ক্যামেরা বসে যাবে।’’

গত বছরের অগস্ট মাসে ক্যাম্পাসের ভিতরেই এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, নজরদারির অভাবে সন্ধ্যের পরে ক্যাম্পাসের মধ্যেই বহিরাগতরা নেশার আসর বসায়। গত অগস্টে মদ্যপ এক যুবক এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করে। এই ঘটনার পরে পাঁচ মাস পেরোলেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement