দার্জিলিঙে আলোচনায় বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র
পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোটে এ বার ‘মহাজোট’। শুক্রবার বিকেলে দার্জিলিঙে হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড এবং জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুংয়ের বৈঠক হয়। সে বৈঠক থেকেই জোটের ঘোষণা করা হয়। দু’দলের তরফে জানানো হয়েছে, পাহাড়ে ‘দুর্নীতিমুক্ত’, ‘উন্নয়নমুখী’ কাজের জন্য জোট গড়া হচ্ছে। জোটে আর কোনও দল আসবে কি না, তা এ দিন স্পষ্ট করেননি দুই নেতা। অজয় এডওয়ার্ড বলেছেন, ‘‘মহাজোটের আলোচনা শুরু হল। বাকি যখন, যা ঠিক হবে, জানানো হবে।’’ আর বিমল গুরুং বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে সম মনোভাবাপন্নেরা এক জোট হবেন।’’
অজয়-বিমলেরা যখন দার্জিলিঙে বৈঠকে বসেন, তখন মংপুতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক করছেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) প্রধান অনীত থাপা। সে বৈঠকে তৃণমূলের সঙ্গে পথ চলা নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি, আসন সমঝোতার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের জোটের ঘোষণা নিয়ে অনীতের বক্তব্য, ‘‘ভোটে সব দলেরই রণনীতি রয়েছে। বিরোধীদেরও থাকবে। আমরাও বৈঠক করেছি। তবে এ সব জোট জিটিএ ভোট, পুরভোটেও ছিল। সামনে জোট আসাটা ভালই।’’ তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে অনীতের বক্তব্য, ‘‘ওঁরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। তবে এটা গ্রামের ভোট। সব আসনে কী হবে, তা আলোচনা করে ঠিক করা হচ্ছে।’’
এ সবের মধ্যেই আজ, শনিবার দার্জিলিঙে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডেকেছেন ‘গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ (জিএনএলএফ)-এর প্রধান মন ঘিসিং। সেখানে ব্লক, সদর-সহ মহকুমা স্তরের সব নেতাদের থাকতে বলা হয়েছে। দলের জোটসঙ্গী বিজেপি অবশ্য এখনও পরিষ্কার করে নিজেদের কৌশল সামনে রাখেনি। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল ও প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার বিরোধী সবাইকে নিয়ে জোটের পক্ষে চেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি। অজয়, বিমল এক হলেও মন ঘিসিংকে সেখানে আনার সমস্যা রয়েছে। আবার জিএনএলএফ ছাড়া, পাহাড়ে লোকবলের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি। কারণ, অজয় বা বিমল সব সময় নিজেদের দল নিয়েই এগোবেন। তাই সবাইকে এক জোট করে লড়াই করার পক্ষপাতী বিজেপির একটা বড় অংশ। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিনের সংখ্যা হাতে-গোনা বলে আগামী এক-দু’দিনের মধ্যে পাহাড়ের নেতাদের সব কিছু চূড়ান্ত করতে বলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের সাংসদ রাজু বিস্তার দাবি, ‘‘২০১৭ সাল থেকে পাহাড়ে তৃণমূল ও সঙ্গীরা একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ভাবে তা শেষ করার ডাকদেওয়া হচ্ছে।’’
তৃণমূলের পাহাড়ের নেত্রী শান্তা ছেত্রীর পাল্টা মন্তব্য, ‘‘পাহাড়ে শান্তি-গণতন্ত্র রাজ্য সরকারের দৌলতেই ফিরেছে। হয়েছে উন্নয়ন। বিজেপি কী করেছে, পাহাড়বাসী জানেন।’’