বাগডোগরা বিমান বন্দর।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের পুরোপুরি আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের জন্য সময়সীমা পাঁচ বছর বেঁধে দেওয়া হল। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কয়েক দফায় তিন হাজার কোটি টাকার কাজ ২০২৮ সালের ৩১ মার্চ শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। সম্প্রতি ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ (এএআই) কর্তৃপক্ষের বৈঠকে বাগডোগরা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আপাতত প্রথম দফায় ৯৫০ কোটি টাকায় নতুন টার্মিনাল-সহ একাধিক পরিকাঠামোর কাজ শুরু হয়েছে। আড়াই বছরের মধ্যে যা শেষ হওয়ার পরে, বিমানবন্দরে ঘিরে নতুন অতিথি নিবাস, পার্কিং সিস্টেম, একাধিক লিজের হোটেল-সহ নানা পরিকাঠামোর কাজ হবে। সে সবই ২০২৮ সালে গিয়ে শেষ হবে
বলে ধরা হয়েছে।
‘এএআই’-এর আঞ্চলিক দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘বিমানবন্দরের আমূল পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। একের পরে এক সময়সীমা বেঁধে পরিকাঠামোর কাজ শেষ করা হচ্ছে।’’
বিমানবন্দরের আধিকারিকেরা জানান, গত দু’দশক ধরে বাগডোগরা বিমানবন্দরকে বড় করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। প্রথম ধাপে, রাজ্য সরকার এবং বায়ুসেনা জমি দেওয়ায় ‘আইএলএস’ বা ‘ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম’ পরিষেবা চালু হয়। যদিও সামরিক বিমানবন্দর হওয়ায় বাগডোগরা বিমাবন্দরের ‘এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল’ (এটিসি) বায়ুসেনা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখান থেকেই প্রয়োজনে ‘আইএলএস’ পরিষেবা চলে, যা ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার দাবি উঠেছে। এ বার আলাদা করে নতুন এক লক্ষ বর্গ মিটারের টার্মিনাল হবে। উত্তরবঙ্গ, সিকিম-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের যাত্রী এবং পরিবহণ ব্যবসা দিনদিন বাড়ছে। ইতিমধ্যে মূল বিমানবন্দরের নকশা চূড়ান্ত হয়ে কাজ চলছে। প্রথমে সীমানা প্রাচীরের কাজ করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক তো বটেই, সামজিক দিককে সামনে রেখেই দেশের অন্যতম নামকরা একটি সংস্থা বাগডোগরা বিমাবন্দরের নকশা তৈরি করেছে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে বিমানবন্দরের যাত্রীর সঙ্গে পণ্য পরিবহণ বেড়েছে। গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে মার্চ মাস অবধি বাগডোগরা বিমানবন্দরে ৮,৯৯৭ টন পণ্য পরিবহণ হয়েছে, যা গত বছরের থেকে ২.৫ শতাংশ বেশি। সেখানে যাত্রী পরিবহণ বেড়েছে, ২৯ শতাংশ এবং বিমান চলাচল বেড়েছে ১০.৪ শতাংশের কাছাকাছি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা খরচে বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ এবং সম্প্রসারণের কাজ চলবে। নতুন করে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরে নতুন ‘কার্গো টার্মিনাল’ও তৈরি হচ্ছে।
প্রায় ১০৪ একর জমি সরকার চা বাগান থেকে অধিগ্রহণ করার পরে সেখানে নতুন টার্মিনাল-সহ পরিকাঠামো তৈরি হবে। করোনার সময় বাদে, এ বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী সংখ্যা অনেক দিন ৩০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেখানে টার্মিনালে রোজই যাত্রীদের তরফে নানা অভিযোগ উঠেছে। বসার জায়গা নিয়ে সমস্যা চলছে।
ঘণ্টায় তিন-চার হাজার যাত্রী বিমাবন্দরে ভিড় করায় টার্মিনালের আয়তনের সমস্যা দিনের পর দিন প্রকট হচ্ছে। ‘এএআই’-এর পূর্বাঞ্চলীয় এক কর্তার কথায়, ‘‘২০২৫ সালের মধ্যে বাগডোগরা বিমাবন্দরের চেহারা, আয়তন বদল হচ্ছে।’’