জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের জলাধার সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এলাকার তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন বাসিন্দারাই। তাতে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেল বিধায়কের অনুগামীকেই।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে প্রায় ৩ ঘন্টা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে রাখে গ্রামবাসীরা। পরে এলাকার বিডিও ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকাতে একটি জলাধার বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। তা সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল বিধায়কের প্রত্যক্ষ মদতেই তা সরানো হয়েছে। তবে সেই বিষয়টি সমাধান না হলে ফের আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন ওই এলাকার প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা বর্তমানে তৃণমূল বিধায়ক অনুগামী আবদুল করিম। গোয়ালপোখরের বিডিও রাজু শেরপা বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছিলেন. তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে. তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোয়ালপোখরে লোধন এলাকাতে পিএইচই এর একটি জলাধার বসানোর কথা ছিল. সেই হিসেবে এলাকাতে আবদুল করিম নামে এক বাসিন্দা সেই জন্য ১০ কাঠা জমি দেন। আবদুল করিম এক সময় ফরওয়ার্ড ব্লক করলেও তিনি এলাকার বিধায়ককে বিধান সভা ভোটের সময় থেকেই সমর্থন করছেন। বর্তমানেও তিনি তার সঙ্গেই ছিলেন।
যদিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন আবদুল করিম নিজেও। অভিযোগ, তার জমিতে জলাধারটি করার কথা ছিল। বর্তমানে সেই জলাধারটি সেখানে না বসিয়ে সেখান থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানি এলাকাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদে সোমবার এলাকাতে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। আবদুল করিমের অভিযোগ, এলাকাতে একটি জলাধার করার প্রস্তাব দেয় এলাকার বিধায়ক। এমনকি সেই সময় তার জমিরই ব্যবস্থা করে দেন তিনি নিজেই। জলাধার করা হবে বলে সেখানে প্রায় ১৩ টি গাছও কাটা হয়। অভিযোগ, পরে বিধায়ক গোলাম রব্বানির নির্দেশে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পদফতর।
তবে আবদুল করিমের দাবি, টাকার বিনিময়ে এলাকার বিধায়ক ওই জলাধার অন্যত্র বসিয়েছেন. তবে এলাকার বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা গোলাম রব্বানির দাবি, ‘‘এলাকাতে পিএচইর জলাধারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল প্রায় বছর তিন আগে। সেই সময় যারা কাজ করতে গিয়েছিলেন তাদের বার বার বাধা দিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। এখন আবার সেই জলাধার সরিয়ে অন্যত্র করায় তারা জলাধারের দাবি তুলছেন। তবে অন্যত্র জলাধার হলেও ওই এলাকার লোকেরাও জল পাবেন। তবে এলাকার লোকেরা যদি আরও জলাধারের দাবি করেন তাদের দাবি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে।’’
যদিও এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, লোধন এলাকাতে যত দিন না পর্যন্ত কোন জলাধারের ব্যবস্থা হচ্ছে হরিয়ানি এলাকার জলাধারের কাজও যেন বন্ধ থাকে।
তবে বিষয়টি নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সহকারি বাস্তুকার সমীর বাগচী বলেন, ‘‘২০১২ সালের প্রকল্পে কাজ করার জন্য বহুবার আসা হয়েছিল। এলাকার লোকেরাই কাজ করতে দেয়ননি। এক বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের মারধর করা হয়ে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই কারণে ওই কাজ বন্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি বিধায়ক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন। ফলে সেখান থেকে অন্যত্র জায়গা খুজে কাজ করা হচ্ছিল। তবে সম্পূর্ণ কাজটি নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে।’’