যাত্রা: বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে টানা দার্জিলিং মেল। এনজেপিতে। ছবি: স্বরূপ সরকার
দীর্ঘ অপেক্ষার পরে এনজেপি থেকে চালু হল বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে টানা যাত্রিবাহী ট্রেন। শুক্রবার চালু হওয়া সেই ট্রেন ঘিরে যাত্রীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। ট্রেনের সামনে বা প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ইঞ্জিন নিয়ে নিজস্বী তুলতেও দেখা যায় বেশ কিছু যাত্রীকে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল এলাকায় এই প্রথম এনজেপি থেকে চালু হয়েছে এমন ট্রেন।
এখন এনজেপি থেকে কলকাতার মধ্যে যাতায়াত করবে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে টানা শতাব্দী এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেল। মালদহের সঙ্গেও বিদ্যুতচালিত ইঞ্জিনে টানা প্যাসেঞ্জার ট্রেনে জুড়ছে এনজেপি। সব ঠিক থাকলে, ১৪ জানুয়ারির মধ্যে এনজেপি-হাওড়া এসি এক্সপ্রেসও বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে চলাচল শুরু হওয়ার কথা। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারি শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘উচ্ছ্বাস আমরাও লক্ষ্য করেছি। কিন্তু যাত্রীদের অনেকেই মনে করছেন, সময় কম লাগবে। তা একেবারেই ঠিক নয়, একটি রুটে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ইঞ্জিন নয় বরং ট্র্যাকের উপর নির্ভর করে। বিভিন্ন জায়গায় সতর্কতাও থাকে। তবে যাত্রা আরও নিরাপদ হল, এটুকু বলা যায়।’’
মালদার রথবাড়ির বাসিন্দা তিনু চৌধুরী শিলিগুড়ি এসেছিলেন কাজে। শনিবার এনজেপিতে ট্রেন ছাড়ার আগে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতাম না। স্টেশনে এসে শুনলাম, বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে চলবে দার্জিলিং মেল। আগে অনেকবারই দার্জিলিং মেল চেপেছি। কিন্তু এ বারে একটু আলাদা রোমাঞ্চ হচ্ছে।’’ এ দিন ইঞ্জিনের সামনে মোবাইল হাতে যাত্রীদের ভিড় ছিল ট্রেনটি ছাড়ার সময়।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, বিদ্যুতচালিত ইঞ্জিনের জন্য এনজেপি-কলকাতা রুটের এক একটি ট্রেনের এক এক ট্রিপে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হতে শুরু করেছে। রেল কর্তারা জানান, ২০২০-তে গুয়াহাটি পর্যন্ত বৈদ্যুতিকরণের কাজ শেষ হয়ে গেলে বাড়বে সাশ্রয়ের হার। ২৫ ডিসেম্বর থেকে এনজেপি-কলকাতা, এনজেপি-নয়া দিল্লি রুটে মালগাড়িও চলাচল শুরু হয়েছে। তবে দিল্লি-এনজেপি রুটে এখনও কোনও যাত্রিবাহী ট্রেন চলেনি। রেলের দাবি, কয়েকটি ট্রেন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চালানো হচ্ছে। ট্রেনের কিছু কর্মী, চালক এবং গার্ডদের বৈদ্যুতিক ট্রেনে যাত্রী পরিষেবার জন্য কিছুটা প্রশিক্ষণও প্রয়োজন। সেটাও চলছে। সূত্রের খবর, আর কয়েক মাসের মধ্যেই এনজেপি থেকে মালদহ, দিল্লি এবং কলকাতার দিকে সব ট্রেনই চালানো হবে বৈদ্যুতিক লাইনে। রেলকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই পদক্ষেপে বারবার ইঞ্জিন বদল করতচে হবে না। আগে কাটিহার এবং গুঞ্জারিয়া থেকে ডিজেল ইঞ্জিন বদল করে এনজেপির দিকে ট্রেন চালাতে হচ্ছিল।