উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বেসরকারি হোর্ডিং (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বাইরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে ভরছে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গাছে, বাতিস্তম্ভে, ভবনের দেওয়ালে বিভিন্ন জায়গায় সেই বিজ্ঞাপন লাগানো হয়েছে। কোনও-কোনও বিজ্ঞাপন বড় হোর্ডিংয়ের আকারের। অভিযোগ, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসারের দফতর, নিরাপত্তা বিভাগ, কর্তৃপক্ষের কোনও সদর্থক ভূমিকা নেই। প্রথমে দুই-একটি বিজ্ঞাপন লাগানো হলেও, কেউ কিছু বলছে না দেখে এমন হোর্ডিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ছেয়ে গিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে উপাচার্য নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যত ‘অভিভাবকহীন’ অবস্থায় বাইরের লোক বা কোনও প্রতিষ্ঠানকে কে বা কারা বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতে চেষ্টা করছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
বিষয়টি জেনে হতবাক অস্থায়ী রেজিস্ট্রার নূপুর দাস। তিনিও সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এমন বিজ্ঞাপন রয়েছে বলে জানা নেই। গুরুতর অভিযোগ। দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রাতেই তিনি অবশ্য নিরাপত্তা বিভাগে নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলি খুলে ফেলার। নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক বরুণকুমার রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে রাতে জানানো হয়েছে। হোর্ডিংগুলি চিহ্নিত করে খুলে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার বিনায়ক সুনদাস বলেন, ‘‘আমাদের তরফে বাইরের কাউকে হোর্ডিং, ব্যানার লাগাতে কোনও রকম অনুমতি দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তা বিভাগের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ অস্থায়ী শিক্ষাকর্মী অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রভাত যাদবের কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নো হোর্ডিং জ়োন। এ ধরনের বাইরের সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের হোর্ডিং ব্যানার কাম্য নয়। কর্তৃপক্ষের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমরা রেজিস্ট্রারের দফতরকে জানাব।’’
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ক্যাম্পাসে বিজ্ঞান দিয়ে পড়ুয়া টানতে উদ্যোগী হয়। ক্যাম্পাস জুড়ে তাদের ২০-২৫টির বেশি বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং ব্যানার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। বিশেষ করে কলা বিভাগের দিকে বিভিন্ন জায়গা লাগানো ছোট বড় হোর্ডিংয়ে ভরে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডলের কথায়, ‘‘বাইরের প্রতিষ্ঠান এখানে হোর্ডিং দেওয়ার সাহস কী ভাবে পাচ্ছে, তা দেখা দরকার।’’
হোর্ডিং রয়েছে এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে অমিত সাংহাই বলেন, ‘‘একটি সংস্থার মাধ্যমে হোর্ডিংগুলো লাগানো হয়। তবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আমাদের হোর্ডিং লাগাতে বলিনি। তা লাগানো হয়ে থাকলে, খুলে
নেওয়া হবে।’’