পাইপলাইন পাতার কাজ পরিদর্শনে মেয়র গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি শহরের পানীয় জল সরবরাহের নতুন প্রকল্পের কাজে বনাঞ্চলের মধ্যে জল উত্তোলক কেন্দ্র (ইনটেক ওয়েল), সাবস্টেশন তৈরি, পাইপলাইন পাতার কাজে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিস্তায় ‘ইনটেক ওয়েলে’র পাম্প হাউস, সাবস্টেশন যেখানে হবে ওই এলাকায় বন্যপ্রাণ রয়েছে, রয়েছে পক্ষিবিতান। তাই কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রকের ছাড়পত্র দরকার। অন্য দিকে, পাইপলাইন পাতার কাজ হচ্ছে যে এলাকায় সেখানে অন্তত দু’শোটি বাড়ি রয়েছে। সেই বাসিন্দারা সরলে পাইপলাইন পাতার কাজ করা যাবে। সমস্যা মেটাতে শনিবার গজলডোবায় যুব আবাসে বৈঠক করেন মেয়র গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘জল প্রকল্পের কাজের একটি ছোট অংশ বনাঞ্চলের মধ্যে পড়ছে। সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতি নেওয়া হবে। আর পাইপলাইন পাতার অংশে যাঁদের ঘরবাড়ি রয়েছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সহযোগিতা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’’
সেচ দফতর, তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন, ভূমি দফতর, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (এসজেডিএ) নিয়ে এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সোমবার কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রকের কাছে অনলাইনে নির্দিষ্ট পোর্টালে ছাড়পত্র পেতে আবেদন করা হবে। এর আগে বন বিভাগের সঙ্গে তা নিয়ে কথা হয়েছে। বন বিভাগের আধিকারিকদের তরফেই তা করা হবে। তা ছাড়া, গজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজের উজানে ডান হাতি ক্যানালের ডান দিক ধরে শিলিগুড়ির দিকে পাইপলাইন পাতার কাজ চলছে। ২৮ কিলোমিটার পাইপলাইন পাতা হচ্ছে। সাহু নদী এবং ক্যানালের সংযোগে একটি অ্যাকুইডাক্ট (ক্যানালকে নদীর উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া) রয়েছে। তার পর থেকে দু’শো ঘর রয়েছে। তার মধ্যে পাইপলাইন ঠিক যে অংশ দিয়ে বসবে সেই জায়গায় অন্তত ৪০টি ঘর রয়েছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্যদেরও তাই এ দিন বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। পরে মেয়র ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।
জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন, ‘‘মেয়র সমস্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন বাসিন্দাদের কাউকে উচ্ছেদ করার বিষয় নেই। কাজ করতে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। ইনটেক ওয়েলের কিছু কাজের জন্য কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রকের সম্মতি পেতে আবেদন করা হচ্ছে।’’
কেন্দ্রের সহযোগিতায় অম্রুত প্রকল্পে ৫৭৯ কোটি টাকায় পানীয় জল সরবরাহের নতুন প্রকল্প হচ্ছে। প্রথম দফার কাজ শুরু হয়েছে। তাতে ইনটেক ওয়েল তৈরি, পাইপ লাইন পাতার কাজ চলছে। দ্বিতীয় দফার কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। চাহিদা বাড়তে থাকায় পুরনো প্রকল্পে পর্যাপ্ত জল মিলছে না। শহরে সুষ্ঠু জল সরবরাহের জন্য এই প্রকল্পের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলেই। পুরসভার তরফেও এই কাজ হচ্ছে। রাজ্যের তরফে চারজন বাস্তুকার দেওয়া হয়েছে।