দেরী করে মিলছে রিপোর্ট, বাড়তে পারে কি সমস্যা। — ফাইল চিত্র।
রোগী সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে, মিলছে অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের রিপোর্ট। কোচবিহারে পর পর দু’দফায় এমন ঘটনা সামনে এসেছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের বক্তব্যে। ওই সূত্রের দাবি, দু’দফাতেই কোচবিহার থেকে কলকাতার ‘নাইসেড’-এ আক্রান্তদের নমুনা পাঠানো হয়। তার রিপোর্ট আসতে কয়েক দিন সময় লেগেছে। উত্তরবঙ্গের কোথাও নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলে, হয়তো সময় কম লাগত। রোগীর পরিজন, বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, আক্রান্তেরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে, এটা ভাল। কিন্তু রোগী সুস্থ না হলে বা অসুস্থতা বাড়লে, দেরিতে রিপোর্ট মেলায় সমস্যার আশঙ্কা কী একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায়, উঠেছে প্রশ্নও!
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের অবশ্য দাবি, ভাইরাস সংক্রমণজনিত জ্বর, সর্দি-কাশির মতো অসুস্থতায় উপসর্গ অনুযায়ী, পদ্ধতি মেনে চিকিৎসা হয়। অন্য ভাইরাস বা অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ যা-ই হোক না কেন, চিকিৎসা পদ্ধতি মোটামুটি একই রকম। রোগীর অবস্থার প্রয়োজনে অক্সিজ়েন, ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করার ব্যাপারেও নজর রাখা হয়। ফলে, কয়েক দিন দেরিতে রিপোর্ট দেরিতে মেলার সঙ্গে চিকিৎসায় সমস্যার কোনও ব্যাপার নেই। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, “রিপোর্ট মিলতে খুব বেশি দিন লাগছে না। ভাইরাসজনিত অসুস্থতার চিকিৎসা পদ্ধতি একই রকম। উপসর্গ দেখে চিকিৎসা হয়। সমস্যা বা উদ্বেগের ব্যাপার নেই।”
কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল থেকেও দু’দফায় কয়েক জন আক্রান্তের নমুনা পাঠানো হয় ‘নাইসেড’-এ। রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পরে অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের রিপোর্ট মেলে বলে দাবি। ওই হাসপাতালের এমএসভিপি রাজীব প্রসাদ বলেন, “অ্যাডিনোভাইরাসের আলাদা কোনও চিকিৎসা নেই। সাধারণ ভাইরাসের মতো চিকিৎসা। ফলে, সমস্যার ব্যাপার নেই।” চিকিৎসকদের একাংশ অবশ্য এ নিয়ে ভিন্ন মতও জানান।
এক চিকিৎসকের কথায়, “অ্যাডিনো হোক বা অন্য ভাইরাস সংক্রমণ, চিকিৎসা পদ্ধতি মোটামুটি একই এবং উপসর্গভিত্তিক। কিন্তু আগে রিপোর্ট মিললে বাড়তি সতর্কতা নেওয়াযায়। অ্যাডিনোভাইরাসের ক্ষেত্রে রোগীর বুকে সংক্রমণের (চেস্ট ইনফেকশন) আশঙ্কা থাকে বলে, তা এড়াতে আগাম ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে। অন্যের সংক্রমণ আশঙ্কা এড়াতে আলাদা ভাবে রাখার কথা বলা যায়।” অন্য এক চিকিৎসকের বক্তব্য, “উপসর্গ দেখে নিয়ম মেনে চিকিৎসা হলেও, রিপোর্ট থাকলে বাড়তি সুবিধা হয়।” এক বাসিন্দার কথায়, “রিপোর্ট সুস্থতার পরে মিললে পরীক্ষার কী মানে!” তবে এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “পরবর্তীতে কিছু করার প্রয়োজন আছে কি না, কী সংক্রমণ হচ্ছে জানতেই এই নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।”
মার্চ মাসে দু’দফায় ‘নাইসেড’-এর রিপোর্টে জেলার মোট ১৭ জনের নমুনায় অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ মেলে। আক্রান্তদের বয়স ১৪ বছরের মধ্যে। রিপোর্ট আসার আগেই আক্রান্তেরা সুস্থ হয়েছে বলে দাবি। এ দিকে, বৃহস্পতিবার কোচবিহারের এবিএন শীল কলেজের এনএসএস-এ যুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা নাটুয়ারপাড় গ্রামে অ্যাডিনোভাইরাস-সহ নানা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচার করেন।