কবে পাকড়াও হামলাকারী

বিক্ষোভে ফুঁসছেন শহরবাসী

সাধারণ বাসিন্দাদের অনেকেই ওই ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই তারা অভিযুক্তদের সম্পর্কে নানা তথ্য হাতে পেয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০২:৩২
Share:

অসহায়: ছেলে নার্সিংহোমে ভর্তি। মাজিদের বাড়িতে তাঁর বাবা মুস্তাফি আনসারি ও মা সালেয়া বেগম। মঙ্গলবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

দিনে-দুপুরে সার্কিট হাউসের কাছের রাস্তায় কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ আনসারিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার পরে কেটে গিয়েছে চারদিন। অভিযুক্তদের একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। তাই ক্ষোভে ফুঁসছে কোচবিহার। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে গড়িমসির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল বের করা হয়। ভবানীগঞ্জ বাজারে একটি পথসভায় সামিল হয়ে গ্রেফতারির দাবিতে সরব হন তাঁরা।

Advertisement

সাধারণ বাসিন্দাদের অনেকেই ওই ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই তারা অভিযুক্তদের সম্পর্কে নানা তথ্য হাতে পেয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

গত শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ কোচবিহার শহরের স্টেশন মোড় লাগোয়া এলাকায় মাজিদকে কাছ থেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। মাজিদ কোচবিহার কলেজের ছাত্র। ওই কলেজে টিএমসিপির আহ্বায়ক তিনি। তাঁকে যারা গুলি করছে তাঁরাও ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। টিএমসিপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

মাজিদ শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তাঁকে এখনও ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায়, চারদিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের কাউকে পুলিশ খুঁজে পায়নি। অথচ ওই অভিযুক্তদের বাড়ি কোচবিহার শহরেই। ঘটনার সময় তাঁদের সঙ্গে বাইক, মোবাইল ফোন ছিল। যে সূত্র তাদের গ্রেফতার ত্বরান্বিত করতে পারে বলে পুলিশের একাংশের দাবি। তা হল না কেন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশের একটি অংশ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তৎপর। অভিযুক্তরা ধরা পড়লে অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে পারে তাই তাদের আড়াল করা হচ্ছে।

এ দিন সন্ধ্যায় শহরের স্টেশন মোড় থেকে তৃণমূল যুব কংগ্রেস মিছিল বের করে। ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেন যুব নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক। মাজিদ তাঁর অনুগামী বলেই পরিচিত। অভিজিৎবাবু বলেন, “ঘটনার চারদিন পরেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। যিনি ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বক্তব্য রাখছেন। এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা ছাড়া কিছু নয়। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে জেলা জুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে।” ওই ঘটনায় শহরের বাসিন্দারা নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন বলে মনে করছেন আইনজীবী শিবেন রায়। তিনি বলেন, “প্রকাশ্য রাস্তায় একজন কলেজ ছাত্রকে গুলি করে খুনের চেষ্টার পরেও দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। চারদিন পরেও তাঁদের হদিশ পাওয়া যায় না। এমন হলে মানুষ কিভাবে নিজেকে নিরাপদ ভাববেন। রাজার শহর আতঙ্কে ভুগছে। সবাই মিলে প্রতিবাদ করতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement