—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চরিত্র নিয়ে অপবাদ দিয়ে এক মহিলাকে প্রায় অর্ধনগ্ন করে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানোর অভিযোগ উঠল কোচবিহার জেলার একটি গ্রামে। অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার জেরে নির্যাতিতা রাতে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের লোকজন রাতেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান। মহিলার অবস্থা স্থিতিশীল। তবে চিকিৎসা চলছে।
নির্যাতিতার স্বামী বুধবার রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ওই গ্রামের পাঁচ মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর এক অভিযুক্ত মহিলার খোঁজ চলছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “তদন্ত চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বশুরবাড়িতে থাকেন ওই মহিলা। মাঝেমধ্যে তিনি জলপাইগুড়ি জেলায় তাঁর বাপের বাড়িতে যেতেন। মাস খানেক আগেও তিনি বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সোমবার তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, মহিলার গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করত এলাকার কয়েক জন মহিলা। বুধবার আচমকা তারা বাড়িতে ঢুকে ওই গৃহবধূকে চরিত্র নিয়ে অপবাদ দেয়। স্বামীর সামনে স্ত্রীর শাস্তির ‘ফতোয়া’ জারি করে তারা। মহিলার স্বামীর অভিযোগ, “ওরা নিজেদের একটি মহিলা সংগঠনের সদস্য বলে পরিচয় দেয়। বিনা কারণে স্ত্রীকে দুশ্চরিত্র অপবাদে শাস্তি দিতে চায়। আমার আপত্তিতে কান না দিয়ে স্ত্রীকে টেনে-হিঁচড়ে বাড়ির বাইরে বার করে, প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় জুতোর মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয়।” তাঁর দাবি, “অপমানে রাতে বিষপান করে স্ত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ছয় মহিলার নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।”
গ্রেফতার হওয়া এক মহিলার স্বামী অবশ্য বলেন, “ওই মহিলা প্রায়ই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন এবং অনেক দিন বাইরে থাকতেন। ওঁর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। তাতে সমাজে দূষণ ছড়াচ্ছে। তাই এলাকার মহিলারা তাঁকে জুতোর মালা পরিয়ে বাজারে ঘুরিয়েছেন।”
স্থানীয় সিপিএম নেতাদের বক্তব্য, অভিযুক্তেরা কোন মহিলা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তা দেখা দরকার। ঘটনায় রাজনীতির যোগ রয়েছে কি না, সেই খোঁজ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে। বিজেপি নেতৃত্ব ‘দোষীদের’ শাস্তি দাবি করেছেন।