Maynaguri

দুর্ঘটনায় ছাত্রের মৃত্যু, অগ্নিগর্ভ ময়নাগুড়ি

উত্তেজিত জনতা দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি এবং আরও একটি গরুবোঝাই গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪১
Share:

রোষ: সেই পিকআপ ভ্যানটি। রবিবার জোড়পাকড়িতে। নিজস্ব চিত্র

গরুবোঝাই পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের জোড়পাকড়ি। মৃত কিশোর স্কুল ছাত্রের নাম সন্তোষ রায় (১৩)।

Advertisement

রবিবার ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি এবং আরও একটি গরুবোঝাই গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তাদের সঙ্গে জনতার বচসা শুরু হয়৷ জেলার উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তারা বিশাল বাহিনী নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকালে ময়নাগুড়ি জোড়পাকড়ি এলাকায় সাইকেল রেখে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল সন্তোষ। সেই সময় মেখলিগঞ্জের সীমান্তের দিকে দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল গরুবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান। ওই ভ্যানের ধাক্কায় ছাত্রটি রাস্তার পাশে পড়ে যায়। ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই কিশোরের উপর উল্টে যায় বলে দাবি স্থানীয়দের। গাড়ির নীচে ৈগুরুতর জখম হয় ওই কিশোর। আরও এক যুবক জখম হন বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। ছাত্রটিকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই সে মারা যায় বলে দাবি স্থানীয়দের।

Advertisement

এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। উত্তেজিত জনতা ওই ভ্যান থেকে গরুগুলিকে নামিয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযোগ। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে আশপাশ থেকে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। এদিকে, ওই ভ্যানের চালকের এক সঙ্গী গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে এলে ওই গাড়িটিও আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। খবর পেয়েই ময়নাগুড়ি দমকল কেন্দ্র থেকে একটি ইঞ্জিন আগুন নেভাতে যায়। উত্তেজিত জনতা দমকল কর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে ফিরিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

গ্রামবাসীদের দাবি, প্রতিদিন ওই এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের গরু পাচার করা হয়। পুলিশকে বারবার অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। স্থানীয় গ্রামবাসী হাসানূর রহমান বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার দুরে রয়েছে সীমান্ত। ওই সীমান্ত দিয়েই গরু পাচার করা হচ্ছে। এই কারণে দুর্ঘটনা হয়। যেখানে দুর্ঘটনা হয়েছে সেখানে স্পিডব্রেকার দেওয়া হোক। গরু পাচার বন্ধ করা হোক।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাদল রায় বলেন, ‘‘অনেকবার পুলিশকে জানিয়েছি। তারপরেও গরু নিয়ে যাওয়া কমেনি। দুর্ঘটনা হলে কয়েকদিন গরুবোঝাই গাড়ি দেখা যায় না। আবার কিছুদিন পরে একই অবস্থা। পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুক এটাই চাই।’’

এদিন ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের হাতে ওই ছাত্রের মৃতদেহ তুলে দিয়েছে পুলিশ। মৃত ছাত্রের মেসো দীনেশ বর্মণ বলেন, ‘‘যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেল। আর ফিরে পাব না সন্তোষকে। ফের এই ধরনের ঘটনা যেন না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’’

জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত জনতা দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে৷ ওই এলাকায় পরিস্থিতি উপর নজর রাখা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement