অনুষ্ঠান শুরুর আগে আলিপুরদুয়ার রবীন্দ্র মঞ্চ প্রাঙ্গনে। নিজস্ব চিত্র।
কোন পক্ষ কতটা রবীন্দ্রপ্রেমী, তা নিয়ে মঙ্গলবার রবীন্দ্র জয়ন্তীতে দিনভর কার্যত ‘দড়ি টানাটানি’ চলল শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে। দলীয় বিভিন্ন কার্যালয়ে রবীন্দ্রনাথের ছবিতে মাল্যদান করে বক্তব্য রাখলেন নেতা-নেত্রীরা। একাধিক সংগঠনের তরফেও রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা হয়। সেখানেও চেয়ার অলঙ্কৃত করে বসে থাকতে দেখা গেল শাসক দলের নেতাদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রবীন্দ্র শ্রদ্ধার্ঘ্য নিজেদের ফেসবুক পেজে লাইভ দেখালেন বিজেপির বিধায়ক-নেতারা। সমাজ মাধ্যমেও রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানাতে কার্যত প্ৰতিযোগিতা চলল রাজনৈতিক দুই দলের মধ্যে। মঙ্গলবার কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার দেখা গেল এমনই চিত্র।
কোচবিহারে জেলা তৃণমূল পার্টি অফিসে রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেখানে ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। পরে, সেখানে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। রবীন্দ্রভবনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে ল্যান্সডাউন হলে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সেখানে উদয়ন ছাড়াও, ছিলেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। মাথাভাঙায় কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসেও অনুষ্ঠান হয়। ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমুলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রত্যেক বছর অনুষ্ঠানের আয়োজন করি।’’ শাসক দলের জেলার একাধিক ব্লক ও অঞ্চল অফিসেও রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা হয়।
ময়দানে নামে বিজেপিও। তাদের কোচবিহার জেলা পার্টি অফিস থেকে শুরু করে বিজেপির একাধিক অফিসে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন হয়। বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়, মালতী রাভা রায়, মিহির গোস্বামী, বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুরা সমাজ মাধ্যমে অমিত শাহের অনুষ্ঠান ‘লাইভ’ দেখানোর আয়োজন করেন। বিরাজ বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আমরা রাজনীতির মধ্যে নেই। সর্বত্র তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।’’
আলিপুরদুয়ারেও শাসক-বিরোধী উভয় শিবিরেই সকাল থেকে শুরু হয় রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন। সকালে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালিত হয় তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা কার্যালয়ে। ছিলেন আলিপুরদুয়ারের বর্তমান বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল, প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী প্রমুখ। বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা কার্যালয়েও রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন হয়। বড়বাজার এলাকায়ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজেপি।
রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে আলিপুরদুয়ার জেলার মূল সরকারি অনুষ্ঠানটি এ দিন হয় রবীন্দ্র মঞ্চে। এ ছাড়া, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে দিনটি পালিত হয়।
এ দিকে, চলন্ত ট্রেনের কামরায় রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করে কোচবিহারের একটি সংস্থা। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার-বামনহাট প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরায় রবীন্দ্র প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠান হয়। ওই সংস্থার কর্তা শঙ্কর রায় জানান, ছোটদের রবীন্দ্রনাথের বইও উপহার দেওয়া হয়।