Balurghat

দল বিড়ম্বনায় পড়ে, নয় এমন কাজ: স্নেহলতা

শুক্রবার রাতে তিন আদিবাসী মহিলার দণ্ডী কেটে দলে যোগ দেওয়ার ঘটনাও দলের জেলা নেতৃত্বকে অগোচরে ঘটে বলে অভিযোগ।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১২
Share:

বালুরঘাট সার্কিট হাউজ়ে মহিলা কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদের পরে দণ্ডী-বিতর্কে জড়িত মহিলাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

নজর টানতে বরাবর দলীয় কর্মসূচিতে নতুনত্ব এনে প্রচারের মুখ হয়ে ওঠার প্রবণতাই যেন ‘কাল’ হল দক্ষিণ দিনাজপুরের মহিলা তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর। রবিবার তিনি পদ হারানোর অব্যবহিত পরেই বালুরঘাটে দলের একাংশ ঘনিষ্ঠ মহলে তেমনই দাবি করেন।

Advertisement

শুক্রবার রাতে বালুরঘাটে দণ্ডী-কাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (রবিবার) প্রদীপ্তার পদ খোয়ানো এবং ওই পদে আদিবাসী মুখ, স্থানীয় ভাটপাড়া অঞ্চলের স্নেহলতা হেমব্রমকে বসানোয় দলের নিচু তলার কর্মীদে একাংশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কর্মীদের অনেকের দাবি, এক জন ছিলেন শহুরে আদপ-কায়দায় চকচকে আর সংগঠনের নিচু তলা থেকে উঠে আসা বর্তমান নেত্রী একেবারে সাদামাটা।

২০১৯ সালে সরাসরি মহিলা সংগঠনের জেলা সভাপতি হন বালুরঘাটের প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর পুত্রবধূ প্রদীপ্তা। এর পরে, সময় যত গড়িয়েছে, দলীয় কর্মসূচিতে কখনও ভিক্ষুককে ওজন-যন্ত্র, বড়দিনের রাতে ফুটপাতে থাকা ভবঘুরেদের কেক, কম্বল দান, শিবরাত্রির অনুষ্ঠানে শিবের মাথায় দুধ ঢালার বদলে কলোনির শিশু-কিশোরদের দুধ খাওয়ানোর মতো একাধিক কর্মসূচি নিয়ে প্রদীপ্তা নজর কাড়তেন বলে দাবি।

Advertisement

প্রদীপ্তার কর্মসূচির খবর জেলার মূল সংগঠনের একাংশ নেতৃত্বও জানতেন না বলে দাবি। শুক্রবার রাতে তিন আদিবাসী মহিলার দণ্ডী কেটে দলে যোগ দেওয়ার ঘটনাও দলের জেলা নেতৃত্বকে অগোচরে ঘটে বলে অভিযোগ। তাঁদের গুরুত্ব না দেওয়া বা দণ্ডী-কাণ্ডের গুরুত্ব না বোঝার পিঠনে ওই ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠার প্রবণতাই দায়ী বলে অনেকে মনে করছেন।

শুক্রবার রাতের ওই যোগদান কর্মসূচিতে প্রদীপ্তা ও তাঁর কয়েক জন অনুগত মহিলা কর্মী ছাড়া, কেউই উপস্থিত ছিলেন না। প্রদীপ্তা অবশ্য সে দিন জানান, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে দলবদলের ওই কর্মসূচি তিনি করেন। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নাম করে প্রদীপ্তাকে স্লোগান দিতেও শোনা যায়। ঘটনার পর থেকে প্রদীপ্তা ফোন ধরেননি। মেসেজের উত্তরও দেননি।

বালুরঘাটের ভাটপাড়া পঞ্চায়েতের চকরাম গ্রামের বাসিন্দা স্নেহলতা সাধারণ গৃহবধূ হলেও ‘দল অন্ত প্রাণ’ বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘চমকের রাজনীতি নয়, সব মানুষকে সম্মান দিয়ে সকলকে নিয়ে দলের কর্মসূচি পালন করব।’’ এত দিন তৃণমূলের আদিবাসী সংগঠনের ব্লক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন স্নেহলতা।

দল সূত্রে খবর, সংসার সামলে প্রতিটি সভা ও কর্মসূচিতে থাকেন স্নেহলতা। বাড়ির সঙ্গে থাকা মুদির দোকান করে দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে স্নেহলতার টানাটানি সংসার। স্বামী গোপাল পুরসভার সাফাই বিভাগের অস্থায়ী কর্মী। এ বার নতুন বড় দায়িত্ব পেয়ে কতটা সামাল দিতে পারবেন?

স্নেহলতার দাবি, ‘‘আমি দলের অনুগত কর্মী। দল বিড়াম্বনায় পড়ে, এমন কাজ হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement