উদ্যোগী: বৃহন্নলাদের আমন্ত্রণ জানাতে তমালিকা-সৈকত। ছবি: অমিত মোহান্ত
বুনিয়াদপুরের পরে বালুরঘাট। দক্ষিণ দিনাজপুরের দুই শহরে দু’টি বিয়ের অনুষ্ঠান নজর কাড়ল বাসিন্দাদের। বুনিয়াদপুরে বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে সামাজিক সচেতনতার অভিনব বার্তা দিয়ে নবদম্পতি সাড়া ফেলেছেন। বৃহস্পতিবারই বালুরঘাট শহরে বৃহন্নলাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে সামিল করলেন আর এক নবদম্পতি। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বলে দূরে না ঠেলে, বিয়ের উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে তাঁদের আমন্ত্রণ জানালেন নববধূ তমালিকা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের রথতলা এলাকার বাসিন্দা তমালিকা মজুমদার সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিয়ে হয় বালুরঘাটের চকভৃগুর বাসিন্দা সৈকত বসুর।
তমালিকা ও সৈকত জানালেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরাও সমাজের অংশ। বিয়ের দিনে তাঁদের আশীর্বাদ ও ভালবাসা পেতেই আমন্ত্রণ জানানো হয়। বালুরঘাট শহরের সাহেবকাছারি এলাকায় গিয়ে তাঁরা আমন্ত্রণপত্র দেন। উপহার হিসাবে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন নতুন শাড়ি। তাঁদের প্রণাম করে আর্শীবাদও চান।
বালুরঘাট শহরের ওই দম্পতির আন্তরিক ব্যবহারে আপ্লুত অনুষ্ঠানে আসা বৃহন্নলারাও। তাঁদের কয়েকজনের কথায়, সমাজে অনেকে আমাদের হেয় চোখে দেখেন। আত্মীয়ের মতো বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এই প্রথম কার্ডে নিমন্ত্রণ পেলাম। আমরা খুব খুশি। বৃহস্পতিবার বুনিয়াদপুরে বিয়ে হয়েছে অর্জুন-শর্মিষ্ঠার। সামাজিক নানা সচেতনতামূলক বার্তায় ভরা তাঁদের বিয়ের আমন্ত্রণপত্রের পাশাপাশি প্রশংসিত হয়েছে সৈকত-তমালিকাদের ভাবনাও।
তমালিকা বললেন, ‘‘গত দুর্গাপুজোয় বালুরঘাটের একটি ক্লাবের বিসর্জনের শোভাযাত্রায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রাণ খুলে নাচতে দেখেছিলাম। মনে হয়েছিল, বাঁকা নজরে দেখা হয় বলেই সমাজের মূল স্রোত থেকে দূরেই থাকেন তাঁরা। তখনই বিয়ের মতো শুভ মূহূর্তে ওঁদের সঙ্গী করার কথা ভাবি।’’