মাল মহকুমার বাগড়াকোটের লিস নদীর বাধ ভেঙে জল বন্দী ১৪ টি পরিবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
লিস নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল জলপাইগুড়ির মালবাজার ব্লকের বাগরাকোট পঞ্চায়েতের চান্দা কোম্পানি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই এলাকায় জলবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৪০টি পরিবার। ওই এলাকাতেই রয়েছে সেনাবাহিনীর বড় ছাউনি। লিস নদীর বাঁধ ভাঙার পরে, জওয়ানেরাই এলাকায় উদ্ধারকাজে হাত লাগান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বুলু চিক বরাইক। প্রশাসন জানিয়েছেন, ওই এলাকায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।
সোমবার গভীর রাত থেকে পাহাড় ও ডুয়ার্সে টানা ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। তার জেরে, মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ আচমকা লিস নদীর ডান হাতি বাঁধের একাংশ ভেঙে জল ঢোকে চান্দা কোম্পানি গ্রামে। এক দিকে রেলসেতু, অন্য দিকে জাতীয় সড়কের সেতু— দুইয়ের মাঝখানে লিস নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জাতীয় সড়কেও জল উঠে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়। ২০০৪ সালেও ওই নদীর জল জাতীয় সড়কে চলে আসায় শিলিগুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
এ দিন ঘটনাস্থলে যান মালবাজারের বিডিও রশ্মিদীপ্ত বিশ্বাস। তিনি জানান, জলবন্দি পরিবারগুলিকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুকনো খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পাহাড়ে প্রচণ্ড বৃষ্টির জেরে, এ দিন কোচবিহারের মাথাভাঙায় মানসাই ও সুটুঙ্গা নদীর জল বাড়তে শুরু করে। এই নদীগুলির জল বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী নিচু এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করে। মাথাভাঙা ৫, ২ ও পূর্ব খাটেরবাড়ি এলাকায় কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন হয়। এ দিন বিকেল পর্যন্ত কোনও সরকারি সাহায্য তাঁরা পাননি বলে অভিযোগ করেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রশাসনের কর্তারা।
সোমবার রাতভর প্রবল বৃষ্টি হয় আলিপুরদুয়ারেও। সেচ দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২১৩ মিলিমিটার। প্রবল বৃষ্টির জেরে, গভীর রাতের পর থেকেই শহরের বেশ কিছু নিচু এলাকায় জল জমতে শুরু করে বলে অভিযোগ। তবে কালজানি নদীর জল স্বাভাবিক থাকায় শহরের অনেক জায়গা থেকেই জল দ্রুত বেরিয়ে যায়। দুপুরের দিকে কালজানি নদীর জলও বাড়তে শুরু করে। পরে, অবশ্য কালজানি নদীর জল ফের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।