Coronavirus

করোনা রুখে ফিরলেন পঁচানব্বইয়ের ধীরেন্দ্র

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরেন্দ্রনাথের তিন ছেলে, এক মেয়ে। তাঁর বড় ছেলের বয়স ৬৫। ১৫ বছর আগে স্ত্রী মারা গিয়েছেন।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

বামনগোলা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৬:৫৫
Share:

জয়ী: ধীরেন্দ্রনাথ। নিজস্ব চিত্র

ছেলেবেলায় তিনি ফুটবল খেলতেন। পরে পারিবারিক জমিতে চাষবাসই ছিল তাঁর জীবন-জীবিকা। এর পর বয়সের ভারে সে কাজ ছাড়েন। তবে, নিয়মিত সকালে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার গ্রামেই হাঁটতেন। ৯৫ বছর বয়সে তাঁকে ঘিরেছিল করোনাভাইরাস। কিন্তু কাবু করতে পারল না। বাইশ দিন কোভিড হাসপাতালে ভর্তি থেকে করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বামনগোলা ব্লকের জগদলা পঞ্চায়েতের সরমুরা আশ্রমপুর গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ রায়।

Advertisement

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরেন্দ্রনাথের তিন ছেলে, এক মেয়ে। তাঁর বড় ছেলের বয়স ৬৫। ১৫ বছর আগে স্ত্রী মারা গিয়েছেন। বড় ও মেজ ছেলের সঙ্গেই এখন থাকেন তিনি। রয়েছে নাতি-নাতনিও। বাড়ির লোকেরা জানান, দুর্গাপুজোর পর পর ধীরেন্দ্রনাথবাবুর জ্বর হয়। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ওষুধ খেয়ে জ্বর কমেনি, বরং বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ব্লকেরই মোদীপুকুর হাসপাতালের এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন। ২৮ অক্টোবর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পরের দিনেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সে দিনই তাঁকে পুরাতন মালদহের নারায়ণপুর বাইপাসে থাকা গোকাল কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯৫ বছরের ধীরেন্দ্রনাথকে যখন ভর্তি করানো হয় তখন জ্বরের পাশাপাশি কাশি এবং প্রবল শ্বাসকষ্ট ছিল। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়েছিল। সেই থেকে টানা ১৫ দিন অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন তিনি। সেখানেই চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে সোমবার বাড়ি ফেরেন তিনি।

Advertisement

ধীরেন্দ্রনাথের মেজ ছেলে মধুসূদন বলেন, ‘‘এই বয়সে বাবা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সুস্থ হয়ে ফিরে আসায় আনন্দ হচ্ছে। কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ।’’ ধীরেন্দ্রনাথের নাতি অজয় বলেন, "দাদু করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে আমরা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু দাদুর মনোবল শক্ত ছিল। শেষ পর্যন্ত দাদু করোনা জয় করে বাড়ি ফিরলেন।"

ওই হাসপাতালের অধিকর্তা মহম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ‘‘চিকিৎসক, নার্স-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনার সঙ্গে দিনরাত যুদ্ধ করছেন। ৯৫ বছরের ধীরেন্দ্রনাথ রায়কে সুস্থ করে বাড়ি ফেরাতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’’

করোনামুক্ত হয়ে ফিরে ধীরেন্দ্রনাথের প্রতিক্রিয়া, ‘‘করোনা হওয়ায় শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু মনের জোর ছিল। ডাক্তার-নার্সদের সহযোগিতায় করোনাকে হারাতে পারলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement