নজর: এই হোটেলেই রয়েছেন ন’জন কাউন্সিলর। বাইরে কড়া পাহারায় পুলিশ। গঙ্গারামপুরে রবিবার। নিজস্ব চিত্র
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বালুরঘাটের একটি অভিজাত হোটেল। গত ১০ দিন ধরে সাদা পোশাকের পুলিশি নজরদারি তো রয়েছেই। তার উপর মূল গেটের সামনে পিছনে সিভিক ভলান্টিয়ারদের সতর্ক দৃষ্টি। যা এড়িয়ে এখন মাছি গলে যাওয়াও প্রায় অসম্ভব।
মাত্র ৯ জন ‘বিশেষ’ অতিথির জন্যেই এই এলাহি নিরাপত্তার আয়োজন! গঙ্গারামপুরের ৯ জন তৃণমূলের পুর কাউন্সিলর, যাঁদের ‘অস্থায়ী ঠিকানা’ এখন এই হোটেল। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে একরকম ‘বন্দি’ অবস্থাতেই দিন কাটছে তাঁদের। শহরের রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আজ, রবিবার গঙ্গারামপুর পুরসভার আস্থাভোটের আগে দলীয় কাউন্সিলরদের যাতে বিরোধীরা ‘ছিনিয়ে’ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারের টিপ্পনী, ‘‘পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্রের ছায়াকে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল। তাই প্রায় দু’মাস ধরে প্রশান্তর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে দলীয় কাউন্সিলরদের কলকাতা, দিঘা, সুন্দরবন ঘুরিয়ে এখন বালুরঘাটের ওই হোটেলের ঘরবন্দি সংসার উপহার দিয়ে তাঁদের স্বাধীনতা কেড়েছে শাসক দল।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ শিবিরের নেতা গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান অমল সরকার পাল্টা বলেন, ‘‘প্রশান্ত এখন বিজেপির লোক। ওঁকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাই আমরা আমাদের কাউন্সিলরকে কী ভাবে কোথায় রাখব, তা বলার কোনও এক্তিয়ার ওদের নেই।’’
২৪ জুন দিল্লিতে গিয়ে সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। তার দু’দিন পরেই তৃণমূল পরিচালিত গঙ্গারামপুর পুরপ্রধান তথা বিপ্লবের ভাই প্রশান্তকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ঘোষণা করেন অর্পিতা শিবিরের উপ পুরপ্রধান অমল। গঙ্গারামপুরের ১৮ কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জনই তাঁদের সঙ্গে আছেন বলে দাবি করে অর্পিতা শিবির। এরপরই ওই ৯ জন কাউন্সিলরকে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রাখার অভিযোগ তোলেন প্রশান্ত।
বিজেপির জেলা সভাপতির অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসনের সমস্ত কাউন্সিলরের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। অথচ ৯ জনকে সারাক্ষণ নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। তাদের ইচ্ছে মত ফোনও ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না।