ফাইল চিত্র।
পুরাতন মালদহের সাহাপুর পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড়ে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে নগ্ন করে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনায় জড়িত আট জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতেই ছাতিয়ান মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা, পুলিশের কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনায় ৪৫ জন ও আরও অনেকের নামে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার ধৃতদের মালদহ জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। শুধু ছাতিয়ান মোড়ের ঘটনা নয়, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটলেই মারধরকারীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিকে, প্রহৃত যুবক মনোজ লালার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে মালদহ মেডিক্যালে। তাঁর বুকে আঘাত রয়েছে। মানসিক ভাবেও তিনি বিপর্যস্ত। পুলিশ জানিয়েছে, পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়িতে তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। একটি হার্ডওয়্যােরর দোকানে আগেও কাজ করতেন মনোজ।
অভিযোগ, ছাতিয়ান মোড়ে এক যুবক তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রথমে মারধর শুরু করে। পরে গ্রামের লোকেরাও কিছু না বুঝে চড়াও হয়। নগ্ন করে অমানবিক ভাবে চলে মারধর। ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে গ্রামের একাধিক মানুষকে মারমুখী। সমাজ বিদ্যা বিষয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক কৃষ্ণা গুহ বলেন, “পুলিশের কড়া পদক্ষেপ করার বিষয়টি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে মারমুখী হওয়ার আগে শাস্তির কথা ভেবে ভয় পায়।”
চলতি মাস থেকেই জেলায় ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনি চলছেই মালদহে। সূত্রপাত হয় হবিবপুরে। হবিবপুরে পিটিয়ে খুনও করা হয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে। তার পর থেকে হবিবপুর, ইংরেজবাজার শহর এবং পুরাতন মালদহে ঘটেই চলেছে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি। পুলিশ জানিয়েছে, অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “খুব দ্রুত ক্লাব সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে বৈঠক হবে। সেই সঙ্গে সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হচ্ছে।”