পর্যটনে নজর উত্তরবঙ্গ। আর সে জন্যই কলকাতার বেঙ্গল বিজনেস সামিটের পর বিদেশের বিনিয়োগকারীদের একাংশকে নিয়ে আসা হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘ভোরের আলো’য়। আগামী ২১ জানুয়ারি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে সেখানে ‘ইনভেস্টর মিট’-ও হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার মতো ৩০ টি দেশ থেকে ৫২ জন বিনিয়োগকারী আসছেন। ২১-২৫ জানুয়ারি ‘হিমালয়ান ট্রেইল’, ‘ডুয়ার্স ট্রেইল’-সহ পাঁচটি পর্যটন ‘সার্কিট’ তাদের ঘুরিয়ে দেখানো হবে। পর্যটন দফতর এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের উত্তরবঞ্চ আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে তাদের ঘোরানো হচ্ছে।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য এ দিন শিলিগুড়িতে বলেন, ‘‘কলকাতায় ১৮-১৯ জানুয়ারি কনভেনশন স্টোরে ‘ডেস্টিনেশন ইস্ট’ নিয়ে কনভেন রয়েছে। তার পরেই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দলকে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গজলডোবায় ৫২ জনের যে দলটি আসছে তাঁদের পুরো প্রকল্পের বিষয়টি জানিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হবে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, গজলডোবায় ওই এলাকায় একটি দ্বিতীয় সেতু তৈরি হবে। ৪৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরকে একটি পাম্প হাউজ তৈরির জন্য। গজলডোবা থেকে বেঙ্গল সাফারি পার্ক পর্যন্ত জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার একটি রাস্তা তৈরি হচ্ছে ৫ কোটি টাকা দিয়ে। মাটির নীচ দিয়ে বৈদ্যুতিন লাইন নেওয়া হবে। পর্যটকদের সাহায্য করতে আলাদা থানা, ১০ শয্যার হেল্থ ক্লিনিক, হেলিপ্যাড, দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০৮ একর জায়গা জুড়ে জঙ্গল সাফারির বোটিং, সাইকেলে ঘোরা, অর্কি়ড পার্ক, হাতি সাফারি, গল্ফ কোর্স সহ অনেক কিছুই থাকছে।
তবে ভোরের আলোর প্রকল্প নিয়ে কলকাতার এক পরিবেশপ্রেমী একটি মামলাও করেছেন। তবে যে ব্যাপারে আদালত থেকে যে সমস্ত অনুমতি এবং নিয়ম মেনে করতে বলা হয়েছে তা মানা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী । পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘পর্যটন নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু তা পরিবেশ আইন মেনে হওয়া উচিত। গজলডোবার ক্ষেত্রে আদালতের নিষেধাজ্ঞা এখনও জারি রয়েছে। তাই সেখানে কোনও নির্মাণ কাজ বৈধ নয়। আদালতের কাছে অবমাননার অভিযোগ জানাব।’’
তবে প্রশাসন এই উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকদূর অগ্রসর লহয়েছে। সিআইআই-এর ট্যুরিজম প্যানেলের প্রধান রাজ বসু জানান, সম্প্রতি দার্জিলিঙের অস্থিরতার জেরে বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা কমেছে। সেটাকে কাটিয়ে পর্যটনকে এগিয়ে দিতেই এই উদ্যোগ। বছর কয়েক আগেও বিদেশি পর্যটন সংস্থাগুলোর একটি দল দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছিল।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দলটিতে ইউএস-এর ১৪ জন, যুক্তরাষ্ট্রের এবং রাশিয়ার ১২ জন করে প্রতিনিধি রয়েছেন।