আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৩৫০ জন দরিদ্র অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধা গত এক বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বার্ধক্য ভাতা না পেয়ে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে অসহায় ভাবে জীবন কাটাচ্ছেন তাঁরা। এই নিয়ে বিডিও অফিসে দফায় দফায় অভিযোগ জানানোর পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ।
অভিযোগ উঠেছে, চাপরের পার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শোভাগঞ্জ গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা ফুলন দাস ১৮ বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পেলেও এক বছর ধরে ভাতা পাচ্ছেন না। এক ছেলে দিনমজুর। ওই গ্রামের বৃদ্ধ শশধর পাল ১৩ বছর ধরে প্রতি মাসে ভাতা পেতেন। ২০ মাস ধরে ভাতা না পেয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। শুধু হিরণবালা, ফুলন দাস নন। চণ্ডিরঝার গ্রামের লক্ষেশ্বরি রায়, সাদা রায় চাপরের পাড়ের বৃদ্ধ পুষ্পনাথ দাসের মতো ব্লকের ৩৫০ জনের বেশি বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এমন বঞ্চনার শিকার হওয়ায় রীতিমতো ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
পুস্পনাথ বলেন, ‘‘এক ছেলে দিন মজুরি করে দিনে ১৫০ টাকা পায়। তা-ও প্রতিদিন কাজ পায় না। বৌমা ও এক সন্তান সহ ওদের তিন জনের সংসার। ওদেরই দিন চলে না আমাকে খাওয়াবে কেমন করে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার আর শরীর চলে না। তবুও গ্রামের বাড়ি বাড়ি বেড়া বাঁধার কাজ করে যা পাই তা দিয়ে দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা হয় না। কিন্তু রোজ এ ভাবে অর্ধাহারে থেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’’
প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন ধরে টাকা পাওয়ার পরে হঠাৎ কী ঘটল, যাতে অনুদান বন্ধ হয়ে গেল। ব্যাঙ্কের বক্তব্য, ‘‘বিডিও অফিস থেকে যে তালিকা এসেছে, তার সঙ্গে আমাদের তালিকা মিলছিল না। তাই টাকা আটকে যায়।’’ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক বিমান চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘তালিকার নাম যে মিলছে না, সেটা আমাদের জানানো হয়নি। তা হলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত। যাই হোক, এখন জেনেছি। ব্যবস্থাও নিচ্ছি। ঠিক কী কারণে এতজন বৃদ্ধ বৃদ্ধার নাম বাদ চলে গিয়েছিল, সেটাও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’