পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের আগেই অপহৃত দুই সদস্যা

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন। তার আগে আদিবাসী মহিলা সংরক্ষিত ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে তৃণমূলের অন্যতম দুই সদস্যাকে অপহরণের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার রাতে দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রায়গঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন। তার আগে আদিবাসী মহিলা সংরক্ষিত ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে তৃণমূলের অন্যতম দুই সদস্যাকে অপহরণের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার রাতে দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রায়গঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা। অভিযোগের তির ওই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে নির্দল হিসাবে জয়ী মানস ঘোষের বিরুদ্ধে। মানসবাবু জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি ছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট নিয়ে গোলমালের জেরে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। যে দুই সদস্যাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁরা ছাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে বসানোর জন্য তৃণমূলের আর কোনও প্রার্থী নেই।

Advertisement

ওই দুই সদস্যা হলেন ৪ নম্বর বিন্দোল থেকে জয়ী সীতা টুডু এবং ৫ নম্বর শেরপুর এলাকার সদস্যা মণি সোরেন। মণি সোরেনের দাদা গণেশবাবু এবং সীতাদেবীর শ্বশুর বুধাই মুর্মু পুলিশের কাছে মানসবাবুর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের পর মানসবাবুকে দলে ফেরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। এই ঘটনায় ওই পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দলীয় কোন্দল তুঙ্গে উঠেছে। পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪২ আসনের ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের দখলে ২৪টি আসন। বিজেপি ১৬টি। একটি আসনে নির্দল মানসবাবু এবং অপর আসনে একজন কংগ্রেস প্রার্থী জিতেছেন। এই পরিস্থিতি সহসভাপতি পদে মানসবাবু দাবি জানিয়েছেন বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রে খবর। তাঁর সঙ্গে দলের একাংশ জয়ী সদস্য রয়েছে বলেও তারা দাবি করেন। পুলিশ মানসবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেছেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, তিনি কাউকে অপহরণ করেননি।

Advertisement

দলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘বোর্ড গঠনের আগে ওই দুই সদস্যকে এ ভাবে অপহরণ করে লুকিয়ে রাখার ঘটনা অন্যায়। ওই দুই অদিবাসী মহিলার উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি দেখুক।’’

নির্বাচনে মানসবাবুর স্ত্রীকে দল রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির ৩০ নম্বর আসনে টিকিট দিলেও মানসবাবুকে দেয়নি। বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির ২৮ নম্বর আসনের টিকিটি চেয়েছিলেন মানসবাবু। দল তাঁকে না দিয়ে বিশ্বজিৎ ঘোষকে প্রার্থী করে। ক্ষুব্ধ মানসবাবু ওই আসনে নির্দল হিসাবে দাঁড়ান। এবং শেষ পর্যন্ত ৩০ নম্বর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে তাঁর স্ত্রীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করান। তাতে বিপাকে পড়ে গোঁজ নির্দল প্রাথী মমতাজ বেগমকে সমর্থন করে তৃণমূল। এর পরেই মানসবাবুকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করা হয়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্বাচনের পরে মানসবাবুকে দলে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঠিক হয় পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের আগে ব্লক সভাপতি সকলকে নিয়ে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসবেন। তার আগে এই ঘটনায় বিব্রত দলের জেলা নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement