—প্রতীকী চিত্র।
বৌভাতের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কনেযাত্রী বোঝাই গাড়ি উল্টে মৃত্যু হল কনের ভাই ও গাড়ির চালকের। গুরুতর জখম হয়েছে তিন কিশোরী সহ আরও সাতজন। তাঁদের মধ্যে কনের বাবা-সহ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ মালদহের গাজলের টোলপ্লাজা সংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি উদ্ধার করলে জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম বিনোদ কামতি (৪২) ও বাপি মজুমদার (২৫)। বিনোদবাবুই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।
উত্তরদিনাজপুরের কানকির বাসিন্দা গোপাল মজুমদারের মেয়ে অঞ্জনার সঙ্গে ১৩ ডিসেম্বর মালদহের হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর বাসিন্দা সুজিত সরকারের বিয়ে হয়। এ দিন ছিল বৌভাত অনুষ্ঠান। গোপালবাবুরা চারটি ছোট গাড়িতে করে মেয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। একটি গাড়িতে চালক সহ মোট ন’জনকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন গোপালবাবু। প্রচণ্ড গতিতে আসা কনেযাত্রী বোঝাই গাড়িটি গাজলের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের টোল প্লাজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। এরপর জাতীয় সড়কের উপরেই উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়ির চালক বিনোদ কামতির। গোপালবাবু, তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে সহ মোট আটজন আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যান গাজল গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে রাতেই তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার সময় গোপালবাবুর ছেলে বাপির মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম গোপালবাবু ও তাঁর দুই দাদাকেও কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই একই সঙ্গে শোক ও উদ্বেগের ছায়া নেমে আসে মালদহের বুলবুলচন্ডী ও উত্তর দিনাজপুরের কানকিতে। সুজিতবাবু বলেন, “একসঙ্গে চারটি গাড়িতে করে কনেযাত্রীরা বেড়িয়ে গিয়েছিল। কী করে কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।” পুলিশ জানিয়েছে, ছোট গাড়িটির প্রচণ্ড গতির জন্যই চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।
ঠিক দু’দিন আগে একইভাবে ভোররাতে বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে জলপাইগুড়ির তোড়লপাড়ায় একটি ডাম্পারের সঙ্গে বরযাত্রী বোঝাই ছোটগাড়ির সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল গাড়ির পাঁচ যাত্রীর। ১৫টি ছোট গাড়ি নিয়ে বরযাত্রী গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছোটগাড়িটি প্রচণ্ড গতিতে ছুটছিল বলে জানিয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।