মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই তৃণমূলের ‘সংহতি মিছিল’ হবে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে কিছু শর্তও বেঁধে দিয়েছে উচ্চ আদালত। কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করবে, মিছিল থেকে এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না বলে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ।
হাই কোর্টের রায় নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এই নির্দেশ আসলে শুভেন্দুর গালে আদালতের থাপ্পড়।” কুণাল আরও বলেন, “বাংলায় শান্তি-সম্প্রীতির মিছিল হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। রাজ্য পুলিশই যথেষ্ট। শুভেন্দুরা বিভেদ চেয়েছিল। আদালত ওদের গালে কষিয়ে থাপ্পড় মেরেছে।”
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ, আগামী সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘সংহতি মিছিল’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, তা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ওই দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জিও জানান বিরোধী দলনেতা। আদালতে শুভেন্দুর যুক্তি ছিল, এর আগেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে। তাই রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ, ২২ জানুয়ারি কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তাই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন রয়েছে। ওই একই কারণে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিও পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট ওই দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি না মানলেও রাজ্য পুলিশের ডিজি, আইজি এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে শান্তি-শৃঙ্খলা সুনিশ্চিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ব্লক স্তরেও সংহতি মিছিলের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। এই মিছিলগুলির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না, তা জেলাশাসক এবং পুলিশকে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রামমন্দির উদ্বোধনকে ‘ভোটের আগে গিমিক’ বলে আগে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা ওই দিনেই পাল্টা কর্মসূচির ডাক দেন। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘ওই দিন হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত সংহতি মিছিল হবে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সর্বধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই কর্মসূচি করব।’’ সেই কর্মসূচিকে মমতা ‘সংহতি মিছিল’ বলেও উল্লেখ করেন। শুধু কলকাতা নয়, তৃণমূলের সর্বময় নেত্রীর নির্দেশ ছিল, ওই দিন সব জেলায়, সব ব্লকে সংহতি মিছিল করতে হবে। মূলত ‘সংহতি’র বার্তা দিতেই এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন বলে জানান তিনি।