ইউনিয়নে মন্ত্রী চান না মমতা, ঘোষণা তৃণমূলে

শ্রমিক সংগঠনে কোনও বিশৃঙ্খলা চলবে না। তাই আইএনটিটিইউসি-র কোনও পদে মন্ত্রীরা আর থাকতে পারবেন না বলে নির্দেশিকা জারি হল তৃণমূলে। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটি সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র একাধিক নয়, একটিই মাত্র সংগঠন থাকবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০৪
Share:

ফাইল চিত্র।

শ্রমিক সংগঠনে কোনও বিশৃঙ্খলা চলবে না। তাই আইএনটিটিইউসি-র কোনও পদে মন্ত্রীরা আর থাকতে পারবেন না বলে নির্দেশিকা জারি হল তৃণমূলে। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটি সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র একাধিক নয়, একটিই মাত্র সংগঠন থাকবে। বস্তুত, শাসক দলে এমন বার্তা নতুন নয়। স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটের বাড়িতে এবং অন্যত্র বৈঠকেও এই বার্তা দিয়েছিলেন। দলের কোনও স্তরে যাতে এখনও কোনও বিভ্রান্তি না থাকে, তার জন্য তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় মারফত এ বার তা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করানো হল।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন সংস্থায় শাসক দলেরই একাধিক শ্রমিক সংগঠনের দৌরাত্ম্য এবং অন্তর্দ্বন্দ্বে বিরক্ত মমতা। আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন, শ্রমিক নেতা ও মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসু, মলয় ঘটকদের একাধিক শিবিরের মধ্যে গোলমাল লেগেই রয়েছে কোনও না কোনও সংস্থায়। দলের ভিতরে-বাইরে বারবার তাঁদের সতর্ক করেও বিবাদ মেটেনি। তাই এ বার কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। দলের মহাসচিব পার্থবাবু মঙ্গলবার দলনেত্রীর নির্দেশ জানিয়ে বলেন, ‘‘রাজ্যের কোনও সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র সদস্য বা পদাধিকারী হিসেবে কোনও মন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এবং একটি সংস্থায় তৃণমূলের একটিই স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন থাকবে।’’

তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা, কোনও শিল্প সংস্থায় শ্রমিক সংগঠনের মাথায় মন্ত্রী থাকলে পরিস্থিতি অহেতুক জটিল হচ্ছিল। তা ছাড়া, মন্ত্রীরাই মাথায় থেকে গেলে শ্রমিক সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসছিল না। নতুন মুখ তুলে আনার তাগিদও এই সংস্কার কর্মসূচির নেপথ্যে কাজ করছে। দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘পরবর্তী স্তরের নেতৃত্বকেও কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাই ভেবেচিন্তেই এমন সিদ্ধান্ত।’’

Advertisement

গত শনিবার চা-বাগানে তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনগুলিকে এক ছাতার তলায় আনা নিয়ে বৈঠকে হাজির ছিলেন দোলা, শোভনদেব, মলয়বাবুরা। সেখানেই তৃণমূল নেত্রীর এই সিদ্ধান্ত ওই মন্ত্রীদের জানানো হয়েছিল। দলের এক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘মন্ত্রীরা কোনও ইউনিয়নের মাথায় থাকলে সেখানে গোলমাল বেশি হচ্ছে। মন্ত্রীরা ইউনিয়নে জড়িত থাকলে নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।’’ একই ভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকর্মীদের সংগঠনেও কোনও মন্ত্রী থাকতে
পারবেন না।

সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে বর্ষীয়ান ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। মন্ত্রী হয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করাটা সত্যিই বিড়ম্বনার।’’ তবে তাঁর দাবি, তিনি কখনও আইএনটিটিইউসি-র সংগঠনে সক্রিয় ভাবে অংশ না নিয়েও মমতার পরামর্শে ইদানীং ট্রেড ইউনিয়নের কাজ দেখাশোনা করতেন শুধু। আর এক মন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শোভনদেব দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েও বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন সংস্থায় পদাধিকারী নির্বাচন হয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। ফলে নতুন পদাধিকারী নির্বাচনের জন্য আর একটা সম্মেলন দরকার। তার জন্য কিছুটা সময় যে দরকার, সেটা দলকে জানানো হয়েছে।’’ পার্থবাবু এ দিন জানিয়েছেন, কোনও শিল্প সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র যে সংগঠনটি আগে নথিভুক্ত হয়েছে, সেটাই থাকবে। পরে কোনও সংগঠন তৈরি হলে তাদের প্রথমটির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement