ল্যাপটপ তদন্ত নয় যাদবপুরে

শেষ পর্যন্ত বোধোদয়! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাপটপ তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল শিক্ষা দফতর। দফতরের যে যুগ্ম সচিব তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনিই বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন। কেন এই সিদ্ধান্ত বদল?

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৫ ০৩:২৭
Share:

এই সেই চিঠি। — নিজস্ব চিত্র।

শেষ পর্যন্ত বোধোদয়! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাপটপ তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল শিক্ষা দফতর। দফতরের যে যুগ্ম সচিব তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনিই বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

কেন এই সিদ্ধান্ত বদল?

যুগ্ম সচিবের ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে রিপোর্ট দিয়েছিল তা খতিয়ে দেখার পরে উচ্চ শিক্ষা দফতরের আর্থিক পরামর্শদাতার সুপারিশ ক্রমে রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ চিঠির শেষে যুগ্ম সচিব শিলাদিত্য বসু রায় এও লিখেছেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বশাসিত সংস্থা। তার সব হিসেবপত্রের তদন্ত করার কথা ক্যাগ (সিএজি)-এর। সেটাই আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাইছি।’

Advertisement

সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে ল্যাপটপ দেওয়া হবে। কিন্তু গত ২২ মে শিলাদিত্যবাবু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়ে জানান, ল্যাপটপ কেনা নিয়ে কিছু অনিয়মের কথা উচ্চ শিক্ষা দফতরের নজরে এসেছে। তার ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে চায় উচ্চশিক্ষা দফতর। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ যেন এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠায়। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য রিপোর্ট পাঠিয়েও দেন। ল্যাপটপ বিলির সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে রুখে দাঁড়ায় শিক্ষক সংগঠন অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (আবুটা)-র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। রাজ্য সরকার এই ভাবে তদন্ত করতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার হরণ করেছে বলে অভিযোগ তুলে তাঁরা কর্মবিরতির আন্দোলনেরও ডাক দেন। শুক্রবার থেকেই এই আন্দোলন শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ দিন যুগ্ম সচিবের নতুন চিঠির কথা জানতে পেরে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয় আবুটা।

আবুটা-র যাদবপুর শাখার আহ্বায়ক গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করা থেকে সরকার বিরত থাকার কারণেই আপাতত আন্দোলন ও কর্মবিরতি স্থগিত রাখা হয়েছে। ফের এই সমস্যা হলে আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হব।’’ আবুটা-র আর এক নেতার মন্তব্য, রাজ্য সরকার টাকা দেয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তাঁরা হস্তক্ষেপ করবেন বলে শিক্ষামন্ত্রী একাধিক বার জানিয়েছেন। ক্যাগের তদন্তের পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়েও রাজ্য সরকার তদন্ত করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে ল্যাপটপ তদন্তে পিছু হটার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার সংক্রান্ত তদন্ত থেকে সরকার সরে আসতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষা দফতরের একাধিক সূত্র। তদন্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার সংক্রান্ত চিঠি পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস ভার্মা জানান, ‘‘আমরা ৬০০ শিক্ষককে ল্যাপটপ দেওয়ার প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement