মাধ্যমিকের দাওয়াই এ বার উচ্চ মাধ্যমিকেও। এবং আরও কড়া মাত্রায়। মোবাইল নিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ তো থাকছেই। সেই সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলিতেও কয়েকটি জেলার কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন এক ঘণ্টার মধ্যে প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বেরিয়ে যাচ্ছিল বলে বারবার অভিযোগ উঠছিল। যে-সব জেলায় এটা হচ্ছিল বলে অভিযোগ, সেখানে ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষা চলাকালীন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় সরকার। দেখা যায়, জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষার দিন আর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্ন বাইরে ছড়ায়নি। ইন্টারনেট বন্ধ রাখাতেই প্রশ্ন বেরোনো আটকানো গিয়েছিল বলে শিক্ষা শিবিরের একাংশের মত।
তাই উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম পরীক্ষা থেকেই কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নবান্ন জানিয়েছে, পরীক্ষার দিনগুলিতে মালদহ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর দিনাজপুরের স্পর্শকাতর অঞ্চলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানাচ্ছে, মোবাইল ফোন নিয়ে কেউ যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে না-পারেন, সেই জন্য থাকবে মোবাইল ডিটেক্টর। তবে সব কেন্দ্রে নয়। মূলত স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতেই মোবাইল ডিটেক্টর রাখা হচ্ছে।
কন্ট্রোল রুম কেন্দ্রীয়: ০৩৩-২৩৩৭৪৯৮৪ থেকে ৮৭ পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ: ৯৫৯৩৫২০৪৭২/ ৯৪৩৪০৪৬৮৮০/ ৯৩৩১৮৪৬০৯৭ মেদিনীপুর: ০৩২২২-২৭৬৩১৮ বর্ধমান: ০৩৪২-২৫৪৪৭২০/ ০৩৪২-২৫৪১৪২৭ কলকাতা: ০৩৩-২৩৩৪৭১২৫/ ২৩৩৪৩১৯৩
আজ, মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। মোট পরীক্ষার্থী ৮,১৬,২৪৩ জন। ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা ৬৩,৪১৩ জন বেশি। রাজ্য জুড়ে ২১১৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছে। তার মধ্যে ২৫০টি কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংসদ। ওই সব কেন্দ্রে সংসদের এক জন করে প্রতিনিধি থাকবেন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে কেন্দ্রের মূল প্রবেশপথে উপস্থিত থেকে তাঁরা ডিটেক্টরের সাহায্যে পরীক্ষা করবেন, কেউ মোবাইল নিয়ে এসেছেন কি না। ওই পরীক্ষার পরেই ছাত্র বা ছাত্রীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে ঘাটতি নয়, পুলিশকে বার্তা মমতার
পরীক্ষা চলাকালীন কী কী কারণে রিপোর্টেড এগেনস্ট (আরএ) করা হতে পারে, তা জানিয়ে দিয়েছেন সংসদ-কর্তৃপক্ষ। মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকলে, টোকাটুকি করলে, নজরদার বা অন্য কোনও শিক্ষককে নিগ্রহ করলে, পরীক্ষার হলে ভাঙচুর করলে, উত্তরপত্র বা উত্তরপত্রের কোনও অংশ বাড়িতে নিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে আরএ করা যাবে। উত্তরপত্রে কুবাক্য বা রাজনৈতিক স্লোগান লিখলে কিংবা অশোভন ছবি আঁকলেও সেটা অপরাধ বলে গণ্য হবে। উত্তরপত্রের মধ্যে কোনও রকম চিঠি বা টাকা ঢুকিয়ে দিলেও সেটা হবে অপরাধ।
কয়েকটি স্কুল নিজেদের উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে। যেমন যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে সিসি ক্যামেরার নজরদারি রয়েছে। তাই আমাদের এখানে কেউ মোবাইল ব্যবহার করলে সহজেই ধরা পড়ে যাবে। তা ছাড়া শিক্ষকদের নজরদারি তো রয়েছেই।’’