কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।
একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা থেকে মিড ডে মিল— এ রাজ্যে প্রায় সমস্ত সরকারি প্রকল্পই দুর্নীতিতে ছয়লাপ। কাটমানি নেওয়াই যেন সার্বভৌমিক অধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। মঙ্গলবার কলকাতায় এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এ ভাবেই চড়া সুরে আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
আবাস কিংবা একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে রাজনৈতিক কারণে এবং ‘নানা অজুহাতে’ টাকা বন্ধ রাখার অভিযোগ প্রায়ই তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই বিষয়ে সরব তাঁর দল। কিন্তু এ দিন নির্মলার প্রশ্ন, দুর্নীতি থাকলে তাঁরা টাকা দেবেন কী ভাবে? একশো দিনের কাজে ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড পাওয়ার দাবি করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘টাকা তো আমজনতার। তাঁদের করের টাকা থেকে কী ভাবে এটা দেব?’’ নির্মলার অভিযোগ, চা বাগানের মতো ব্যক্তিগত সম্পদের কাজে ওই প্রকল্পকে ব্যবহার করা হয়েছে। আবাস প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন ‘ঘর থাকা’ অনেকে! এ ভাবে দুর্নীতির টাকা যাঁদের পকেটে গিয়েছে, তাঁদের থেকে তা আর আদায় করা অসম্ভব বলেই উল্টে তৃণমূল সরকারই এখন রাজ্যের কোষাগার থেকে আমজনতার করের টাকা দ্বিতীয় বার খরচ করছে।
অর্থমন্ত্রীর দাবি, একের পর এক কেলেঙ্কারি ঘটে চলেছে। দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট-ভিত্তিক অপরাধ ঘটছে। কিন্তু পুলিশের একাংশের মেরুদণ্ড নেই। তাঁরা কার্যত শাসকদলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আদানি-অম্বানী নন, রেশন দেওয়ার কথা আমজনতাকে। শুধু ২০২২ সালের এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের মধ্যে মিড ডে মিল সংক্রান্ত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে! এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এমন হৃদয়হীন!’’
নির্মলা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী-দিদি নিজেই ২০১৯ সালে ২০১১ সালের কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার মানে তিনি স্বীকার করছেন। কিন্তু তার পরেও কিছু হয়নি।’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে ওঁর (নির্মলা সীতারামন) সরকার প্রথম পুরস্কার দিয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে বাংলা একাধিক বার পুরস্কৃত। আর এখানে এসে উনি মিথ্যা রাজনীতি করছেন!’’