শিল্পী ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র
কাকার পচাগলা দেহ আগলে বসেছিলেন ভাইঝি। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে ভাটপাড়ার বলরামঘাট রোডের বাবুরানি পাড়ার ওই বাড়িতে ঢোকে পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে বৃদ্ধ রাজারাম ভট্টাচার্যের দেহ। তাঁর ভাইঝি শিল্পী ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বছর পঁয়ত্রিশের ওই তরুণী মানসিক ভাবে সুস্থ নন বলেই অনুমান। অন্তত তিন দিন আগে রাজারামবাবুর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কী ভাবে তিনি মারা গেলেন, জানতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
কলকাতার রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের সঙ্গে এই ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ওই ঘটনায় দিদি দেবযানীর কঙ্কাল আগলে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিচ্ছিলেন ভাই পার্থ দে। একাকীত্ব, মানসিক অবসাদের জেরে প্রিয়জনের দেহ আগলে রাখার এমন আরও কিছু ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে। শিল্পীদের প্রতিবেশী মধুমিতা দত্ত জানান, দুর্গন্ধে টিঁকতে না পেরে মঙ্গলবার কয়েকজন ওই বাড়িতে যাই। ডাকাডাকির পরেও দরজা খোলেনি। কাকা-ভাইঝি পাড়ার লোকজনের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। সন্দেহ হওয়ায় সকলে খবর দেন স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মদনমোহন ঘোষকে। তিনি যোগাযোগ করেন পুলিশের সঙ্গে। যে ঘরে দেহটি পড়েছিল, সেই ঘরের মেঝেতেই ছড়িয়ে ছিল থালা-বাটি। পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘অবিবাহিত ভাইঝিকে নিয়ে রাজারামবাবু ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ছিলেন। কী ভাবে সংসার চলত তা-ও সঠিক ভাবে কেউ জানে না।’’
তিনি রবীন্দ্রভারতীর স্নাতক, পুলিশকে এ কথা জানিয়েছেন শিল্পী। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অসংলগ্ন উত্তর মিলেছে। রাজারামবাবুর মৃত্যু কবে হয়েছে, প্রশ্ন করায় শিল্পীর উত্তর, ‘‘শুক্রবার চলে গেল বোধ হয়। ভগবানই সব ব্যবস্থা করবেন।’’