NIA attacked in Bhupatinagar

অনৈতিক কিছু হয়নি, হাই কোর্টের নির্দেশেই তদন্ত হয়েছে, ভূপতিনগর নিয়ে বিবৃতি দিল এনআইএ

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এক বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে গিয়ে ‘হামলার মুখে’ পড়ে এনআইএ। স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাড়িতে তোলার পরে এনআইএ-র গাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৫
Share:

শনিবার এনআইএ-র এই গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। —ফাইল চিত্র

দু’বছর আগের এক বিস্ফোরণকাণ্ডের এনআইএ তদন্ত। আর তাকে কেন্দ্র করেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ হয়েছিলেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র তদন্তকারীরা। শাসক তৃণমূল ভোটের আগে এই কেন্দ্রীয় সংস্থাটির সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বিতর্কের আবহেই এ বার বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল এনআইএ।

Advertisement

রবিবার বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাটির তরফে বলা হয়েছে অনভিপ্রেত বিতর্ক চলছে। তার পরই তারা বলে, “মহামান্য কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২৩ সালের ৬ জুন একটি বিস্ফোরণ সংক্রান্ত মামলার তদন্তভার হাতে নেয় তারা। সেই মতোই শনিবার নারুয়াবিলা গ্রামে তল্লাশি চালাতে যাওয়া হয়।” কোনও অনৈতিক কাজ করা হয়নি বলেও বিবৃতিতে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।

তাদের উপর হামলার প্রসঙ্গ পুনরুত্থাপন করে এনআইএ বিবৃতিতে জানায়, বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃত দু’জনকে স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা ‘বিনা প্ররোচনায়’ তদন্তকারীদের উপরে হামলা চালায়। এক জন তদন্তকারী আহত হন এবং এনআইএ-র সরকারি গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিয়ম মেনেই তদন্ত চালানোর কথা বলে এনআইএ বিবৃতিতে জানায়, নিরপেক্ষ সাক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। সঙ্গে ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ান এবং মহিলা কনস্টেবলরা। নিয়ম মেনেই দুই তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতিকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে এনআইএ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ভূপতিনগরে একটি বিস্ফোরণ মামলার তদন্ত করছে এনআইএ। তারই তদন্তে শনিবার ওই এলাকায় যান এনআইএ-র কর্তারা। স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাড়িতে তোলার পরেই এনআইএ-র গাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। শনিবারই ভূপতিনগর থানায় হামলার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে এনআইএ। তবে সেই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তার মধ্যেই শনিবার রাতে ভূপতিনগর থানায় এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছে ধৃত এক তৃণমূল নেতার পরিবার। এফআইআর দায়ের করে সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর চলছে।

শনিবারই তোপ দেগেছিলেন মমতা। রবিবারও ভূপতিনগরের ঘটনা নিয়ে সরব হন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘মানুষ প্রতিবাদ করলে এনআইএকে ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। মধ্যরাতে মহিলা ঘরে ঘুমাচ্ছেন। গদ্দারের এলাকায় মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে চলে গেল। আগে পুলিশের উর্দি পরে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে অনেকেই বদমায়েশি করেছে। মেয়েরা কী করে বুঝবেন? মা-বোনেরা প্রতিবাদ করলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ডায়েরি করা হল। বলছে তৃণমূলের সব বুথ এজেন্টদের গ্রেফতার করো।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “এনআইএ, সিবিআই, বিজেপির ভাই। ইডি আর ইনকাম ট্যাক্স। বিজেপির টাকা তোলার বক্স।”

রবিবারই ধূপগুড়ির জনসভা থেকে এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘তৃণমূল চায় ওদের গুন্ডাদের সন্ত্রাস করার লাইসেন্স মিলুক। তদন্তকারীরা তদন্ত করতে গেলে ওদের উপর হামলা করে। অন্যদের দিয়ে হামলা করায়। আইন এবং সংবিধানকে নষ্ট করার দল।’’

এর মধ্যেই ভূপতিনগরকাণ্ডে এনআইএ অফিসারদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে তৃণমূল। শাসকদলের একটি সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় এনআইএ এবং বিজেপির ‘যোগসূত্র’ রয়েছে— এই দাবি তুলে শীর্ষ আদালতে যাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের দাবি, এনআইএর এসপি ধনরাম সিংহের বাড়িতে বৈঠক করেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ওই বৈঠকের পরেই দলের দুই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। যদিও ওই সব দাবি খারিজ দেন জিতেন্দ্র। তাঁর বক্তব্য, ওই সব অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement