গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সন্দেশখালিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ মান্যতা পেল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বা এনএইচআরসি-র রিপোর্টেও। কমিশনের তরফে জানানো হল, সন্দেশখালির ঘটনায় ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক ঘটনা’ ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনা রুখতে অবহেলা ছিল বলেও প্রকারান্তরে আঙুল তোলা হয়েছে প্রশাসনের দিকেই। শুধু তা-ই নয়, সন্দেশখালির পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ করতে ১২ দফা সুপারিশ করেছে কমিশন। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্য প্রশাসন কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা দু’সপ্তাহের মধ্যে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে কমিশনের একটি দল। তার ভিত্তিতেই মোট ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলির মধ্যে রয়েছে সন্দেশখালিতে আইনের শাসন সম্পর্কে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা, অপধারমূলক কাজের সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং অভিযোগগুলির নিষ্পত্তি করা, যৌন অপরাধের শিকার যাঁরা, তাঁদের কাউন্সেলিং এবং পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করা।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখ এবং তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের জমি জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রেক্ষিতে মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশে ‘দখলিকৃত’ জমি বৈধ মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়াও কমিশনের সুপারিশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (ইডি)-র করা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত, স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধি, তাঁদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা, দখলিকৃত জমিকে চাষের জন্য উপযোগী করে তোলা, সন্দেশখালি থানা এলাকায় ‘নিখোঁজ’ মেয়েদের উদ্ধারে তদন্ত চালানোর কথা বলা হয়েছে। এই সুপারিশগুলির ভিত্তিতে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করছে, তা জানতে রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং মুখ্যসচিবকে দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কমিশন।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সন্দেশখালির মানুষের মন থেকে ‘ভয় উপড়ে ফেলা এবং তাঁদের ‘সুস্থ ভাবে বাঁচার অধিকার’ সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সন্দেশখালিকাণ্ডে ২৫টি মামলার কথা জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। কমিশনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় ‘অত্যাচারিত’ অনেক গ্রামবাসী চুপ করে রয়েছেন। তা ছাড়া সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে পক্ষপাত এবং ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কমিশনের তরফে।