জটিল: যানজটের এই নিত্য ছবি কি বদলাবে, প্রশ্ন সেটাই। নিজস্ব চিত্র
রয়েছে চার লেন। হবে ছয়।
চলতি বছরেই হুগলির ডানকুনি থেকে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় পর্যন্ত ২ নম্বর জাতীয় সড়ককে সম্প্রসারিত করার কাজ শুরু হচ্ছে। এ সংক্রান্ত পরিকল্পনার কাজ ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এর মধ্যে ডানকুনি থেকে পালসিট পর্যন্ত অংশ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে নামেই বেশি পরিচিত।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকল্প অধিকর্তা স্বপন মল্লিক বলেন, ‘‘ডানকুনি থেকে পানাগড় পর্যন্ত মোট ১৩৪ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা অনেক আগেই হয়েছিল। টাকার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা পুরোপুরি মেটার মুখে। আশা করি, দ্রুত কাজ শুরু হবে। এতে ১৬০০ কোটি টাকা খচ হবে। দু’টি পর্যায়ে ভাগ করে কাজ হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
দু’দশক আগে চালু হয়েছিল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। যা ২ নম্বর জাতীয় সড়কেরই অংশ। ৬৫ কিলোমিটারের ওই সড়কের দু’প্রান্তে রয়েছে ডানকুনি এবং পালসিট। দু’জায়গাতেই টোল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তবে, যখন ওই রাস্তা চালু হয়, গাড়ির সংখ্যা অনেক কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে গাড়ি বেড়েছে। রয়েছে ভিন্ রাজ্যের পণ্যবাহী গাড়িও। কিন্তু সেই অনুপাতে রাস্তা চওড়া নয়। ফলে, প্রায় প্রতিদিনই নানা জায়গায় যানজট হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হিসেবে, প্রতিদিন দুই টোলপ্লাজ়া দিয়ে গড়ে ২৫ হাজারেরও বেশি গাড়ি চলাচল করে।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বর্তমানে ২২ মিটার চওড়া। গোটা ৬৫ কিলোমিটার জুড়েই বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, রাস্তার দু’ধারে পণ্যবাহী ট্রাকের ‘পার্কিং’। কারণ, ওই সড়কে পর্যাপ্ত ‘লে বাই’ (যেখানে ট্রাক দাঁড়াতে পারে) নেই। তার উপর কলকাতায় পণ্যবাহী ট্রাক ঢোকার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। ফলে, সময়ের আগে চলে আসা ট্রাক ওই সড়কেই অপেক্ষা করতে থাকে। এর জেরে বহু সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গড়ে এই রাস্তায় প্রতিদিন একটি করে দুর্ঘটনা ঘটেই।
তার উপর কিছু ক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত পরিকাঠামোরও অভাব রয়েছে। তাঁদের দাবি, এই সমস্ত অসুবিধা দূর করতেই ওই রাস্তা ছয় লেনের করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন আগেই সম্প্রসারণ কাজের খুঁটিনাটি জানার জন্য সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষায় ওই পথে সমস্যার বিষয়গুলিও উঠে এসেছে।
অবশ্য ২০১৪-র জুনে পানাগড় বাইপাস নির্মাণের মধ্যে দিয়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ঝাড়খণ্ডের বারওয়াড্ডা থেকে পানাগড় পর্যন্ত প্রায় ১২৩ কিলোমিটার রাস্তা ছ’লেন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, দু’টি জায়গা বাদে সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষ। ওই দু’টি জায়গায় কাজ আটকে রয়েছে জমি-জটে।
তথ্য সহায়তা: নীলোৎপল রায়চৌধুরী ও সুব্রত সীট।