ম্যালে তখন চলছে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান।
সকালে ঝকঝকে আকাশে দিগন্ত জুড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা। সন্ধ্যা থেকে ম্যাল মাতিয়ে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। গতবারের মতো তুষারপাত না হলেও এ বারে দার্জিলিঙে কনকনে ঠান্ডা। সেই শীতকে সঙ্গী করেই সকাল-সন্ধ্যা এই দুইয়ে মজলেন পর্যটকেরা।
শীতের সন্ধ্যায় কনকনে হিমেল হাওয়ার মধ্যে পুলিশের আয়োজনে শুরু হয় ম্যালের এই অনুষ্ঠান। তাই ঘিরে কিন্তু পারদ চড়তে থাকে। ব্যান্ডের গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোমর দোলাতে দেখা গিয়েছে কণিকা নাগ, তমাল নাগদের মতো কলকাতা থেকে আসা পর্যটকদের। পুলিশের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে সকলকে স্বাগত। পর্যটকদের কথা ভেবেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাসিন্দাদের তা জানাতে ম্যালে ওঠার রাস্তা, চকবাজার ট্যাক্সি স্ট্যান্ড-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার টাঙানো হয়েছে এ দিন সকালেই। তাতে উৎসাহীরা খোঁজখবরও নিতে শুরু করেন সন্ধ্যার অনেক আগেই। ভরে যায় ম্যালও।
হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা রাহুল সিংহ রায় পাহাড়ে বেড়াতে এসেছেন বাড়ির লোকজনের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘‘চার দিন আগেই পরিবারকে নিয়ে এসেছি। বর্ষবরণের রাতটা শৈলরানি দার্জিলিঙে সকলে মিলে কাটানোর জন্যই তো আসা।’’ তিনি বলেন, ‘‘ম্যালে পুলিশের তরফে অনুষ্ঠান হচ্ছে জানতে পেরে আমরাও এসেছি। দারুণ উপভোগ করলাম। তবে রাত ন’টার মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। আরও কিছুক্ষণ চললে আরও আনন্দ করা যেত।’’ শ্যামল চট্টোপাধ্যায় স্ত্রী মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়রাও এসেছেন মেয়ে স্বপ্নজাকে নিয়ে। ম্যালের অনুষ্ঠান উপভোগ করলেন তাঁরাও।
ম্যালের অনুষ্ঠান ছাড়াও দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাবে বর্ষবরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠান, নৈশভোজের ব্যবস্থা করা হয়। ক্লাবের সদস্যরা ছাড়াও পর্যটক বা উৎসাহীরাও ফি দিয়ে সেখানে অংশ নিতে পেরেছেন। ক্লাবের সদস্য বিমল খন্না বলেন, ‘‘রাত বারোটায় বর্ষবরণ পর্যন্ত সকলে মিলে হইহুল্লোড় করে মেতেছিল। অনেকে পরিবারের লোকদের নিয়েও এসেছিলেন।’’
দার্জিলিং শহরের কয়েকটি হোটেলেও এদিন বর্ষবরণের পার্টি, পান আহারের বিশেষ ব্যবস্থা ছিল গভীর রাত পর্যন্ত। অনেকে আলোর মালায় সাজিয়েও তুলেছেন হোটেলকে। দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, শহরের অন্তত পাঁচ হোটেলে বর্ষবরণের বিশেষ আয়োজন ছিল। অনেকেই বন্ধু, পরিচিতদের সঙ্গে সেখানে বর্ষবরণের রাতে মেতে ছিলেন। নিজস্ব চিত্র