প্রতীকী চিত্র।
জল ভরার জন্য বাঁধা সময় পায় ট্রেন। এবং সফর মসৃণ রাখার জন্য সেই সময়টা সাধারণ ভাবে খুব কমই রাখা হয়। স্বল্প সময়ের মধ্যে সব ট্রেনের সব কামরায় জল ঠিকঠাক পৌঁছল কি না, এত দিন সব সময় সে-দিকে যথাযথ ভাবে নজর রাখা যেত না।
সেই সমস্যার সুরাহা করে দিয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। বিপুল সংখ্যক ট্রেনের সব কোচে দ্রুত জল ভরার জন্য পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। রেল জানিয়েছে, পূর্ব রেলের আসানসোল স্টেশনে এই পরিষেবা শুরু হয়ে গিয়েছে। এর ফলে অল্প সময়ে নির্ভুল ভাবে ট্রেনের কোচে জল ভরার সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক প্রক্রিয়ার উপরেও নিখুঁত নজরদারি চালানো সম্ভব।
রেল সূত্রের খবর, ‘সুপারভাইজ়রি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজ়িশন’ বা স্কাডা প্রযুক্তিতে জল ভরা এবং তার প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রাখার এই পুরো ব্যবস্থাটিই দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রেল জানাচ্ছে, এই প্রযুক্তির অ্যাপের মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তে জলের প্রবাহ এবং জলের খরচের উপরে নজর রাখা সম্ভব। সামগ্রিক ব্যবস্থার উপরে নজর রাখা হয় সিসি ক্যামেরার সাহায্যে। রেলের হিসেব, শুধু আসানসোল স্টেশনে বিভিন্ন ট্রেনের কোচের জন্য দৈনিক আট লক্ষ লিটার জল লাগে। রাত-দিন মিলিয়ে দূরপাল্লার ৩৪টি ট্রেনের ৬৫৬টি কোচে জল ভরা হয় ওই স্টেশনে। এ ছাড়াও ১২০টি মেমু কোচে জল ভরতে হয় আসানসোলে। জল ভরার জন্য এক-একটি ট্রেন গড়ে ১০ মিনিট সময় পায়।
রেলের খবর, প্রাযুক্তিক ব্যবস্থা আগেও ছিল। তবে পুরনো প্রযুক্তিতে সব কোচের নির্দিষ্ট ট্যাঙ্কে জল পৌঁছল কি না, সব সময় তার উপরে নজরদারি চালানো সম্ভব হত না। নতুন প্রযুক্তিতে মূল পাইপের সঙ্গে যুক্ত ছোট পাইপগুলির সচলতার উপরে যান্ত্রিক উপায়ে নজর রাখা সম্ভব। ফলে আগে অনেক বেশি কর্মী নিয়ে যে-কাজ করতে হত, এখন অনেক কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে আরও নির্ভুল ভাবে সেটা করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন রেলের আধিকারিকেরা। পূর্ব রেলের সাহেবগঞ্জ স্টেশনে মাসখানেক আগে ওই প্রযুক্তি চালু হয়েছে। তবে ওই স্টেশনটির অবস্থান পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে। পশ্চিমবঙ্গের কোনও স্টেশনে এই প্রথম আধুনিক প্রযুক্তিতে জল ভরার ব্যবস্থা হল।