নওশাদ সিদ্দিকী এবং শওকত মোল্লা। —ফাইল চিত্র।
ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লাকে ভাঙড়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার পর থেকে হানাহানি বেড়েছে বলে অভিযোগ করলেন স্থানীয় আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। শওকতের নাম না করে নওশাদের অভিযোগ, ‘ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন’ শওকতকে ‘নটোরিয়াস ক্রিমিনাল’ (ভয়ঙ্কর দুষ্কৃতী) বলে চিহ্নিত করেছে।
রবিবার বিকেলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের শোনপুর সব্জি বাজারে জনসভার আয়োজন করেছিল আইএসএফ। নওশাদ ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। নওশাদের মতে, ভাঙড়ে বিধানসভা এলাকায় বিধানসভা ভোটের পরে দু’একটা ‘ছোটখাটো ঝামেলা’ হলেও মানুষ তা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিয়েছিলেন। শওকতের নাম না করে নওশাদের অভিযোগ, তাঁকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে ভাঙড় উত্তপ্ত হতে শুরু করে। বিধায়কের কথায়, ‘‘এর দায়ভার মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে, ভাঙড়ের পর্যবেক্ষককে নিতে হবে।’’
১৫ জুন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ভাঙড় ২ ব্লক অফিস ঘিরে রেখে তৃণমূল সন্ত্রাস চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ব্লক অফিসের দখল নেয় আইএসএফ। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে মনোনয়ন দেওয়ায় আইএসএফের ৮২ জনের মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। তা নিয়ে হাই কোর্টে মামলা চলছে। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নওশাদ বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’
বিকাশ পুলিশকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘‘জনগণের করের টাকায় পুলিশের মাইনে হয়। আরাবুল-হাকিমুল বাহিনী পুলিশের মাইনে দেয় না।’’ শওকত পরে বলেন, ‘‘আসলে আমাকে পর্যবেক্ষক করায় নওশাদ চাপে পড়ে গিয়েছেন। কারণ, ওঁরা বলেছিলেন, ভাঙড়ে তৃণমূলকে মনোনয়ন জমা করতে দেবেন না। আমি আসার পরে ভাঙড়ে তৃণমূল উজ্জীবিত হয়েছে।’’
এ দিনই দেগঙ্গায় জনসভায় এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ফরওয়ার্ড ব্লক, কংগ্রেস, আইএসএফ নেতৃত্বও ছিলেন। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ‘গোপন আঁতাত’ চলছে বলে অভিযোগ করেন সেলিম। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন।
তৃণমূল নেতা মফিদুল হক সাহাজি ওরফে মিন্টু পরে বলেন, ‘‘এই জেলাতেই বাম, কংগ্রেস, বিজেপি, আইএসএফ জোট করে মানুষের ঘোঁট নাম দিয়েছে। গোপন আঁতাঁত কারা করেছে, মানুষ জানেন।’’ বিজেপি নেতা তুহিন মণ্ডল বলেন, ‘‘সেলিমরা মানুষকে গুলিয়ে দেওয়ার রাজনীতি করছেন।’’