বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বুধবার সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির নতুন সভাপতি নির্বাচিত হলেন নাজিরা বিবি। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয়েছে তাঁর সঙ্গে কোন দলের দখলে গেল এই পঞ্চায়েত সমিতি, তা নিয়ে। কংগ্রেসের দাবি তাদেরই সমর্থনে সভাপতি হয়েছেন নাজিরা। অন্য দিকে সিপিএমের কথা, নাজিরা সিপিএম সদস্য। তাই নাজিরা সভাপতি হওয়ায় সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমেরই দখলে রইল।
২৭ জন সদস্য রয়েছেন মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিতে। সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ১৬, কংগ্রেসের ৯ এবং তৃণমূলের ২। এই অবস্থায় গতবছর বোর্ড দখল করে সিপিএম। সভাপতি হন সিমি খাতুন। গত ১৭ নভেম্বর কংগ্রেস ও বিক্ষুব্ধ সিপিএম সদস্যদের আনা অনাস্থায় ১৪-০ ভোটে অপসারিত হন ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিমি খাতুন। সেই বিক্ষুব্ধ সদস্যদেরই অন্যতম হলেন নব-নির্বাচিত সভাপতি নাজিরা। সিপিএম নিয়ন্ত্রিত সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। মঙ্গলবারই তিনি কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন।
বুধবার ছিল নয়া সভাপতি নির্বাচনের দিন। এদিন সিপিএমের এক জন সদস্য ছাড়া সভায় হাজির হন বাকি ২৬ জনই। সামশেরগঞ্জ ব্লকের কংগ্রেস সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, “নাজিরা বিবি-সহ সিপিএমের ৫ সদস্য দল না ছেড়ে আলাদা গোষ্ঠী হিসেবে আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। তাঁদের সাহায্য নিয়েই কংগ্রেস সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে সিপিএমের সভাপতিকে অপসারিত করেছে। এদিনের সভায় কংগ্রেসের সদস্য আহসান আলি নাজিরার নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। সমর্থন করেছেন কংগ্রেসেরই মিরজাহান বিবি। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন নাজিরা বিবি। নাজিরার জয়ের ফলে সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের দখলে এল।”
কংগ্রেসের এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে সিপিএম। সিপিএমের ধুলিয়ান জোনাল কমিটির সম্পাদক রোবজুল ইসলাম বলেন, “নাজিরা সিপিএমের প্রতীকেই পঞ্চায়েত সমিতিতে নির্বাচিত। দল থেকে এখনও ইস্তফা দেননি তিনি। এদিনের সভায় পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা আসাদুল হক সভাপতি হিসেবে নাজিরা বিবির নাম প্রস্তাব করেন। সমর্থন করেন সিপিএমের কর্মাধ্যক্ষ রাকেশ সিংহ। কংগ্রেসের সদস্যরা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন মাত্র। সামশেরগঞ্জে সভাপতি বদল হলেও বোর্ড রয়েছে সিপিএমের দখলেই।”
দু’টি দলের মধ্যে নব-নির্বাচিত সভাপতিকে নিয়ে এই টানাপড়েনে অবশ্য বিন্দুমাত্র বিচলিত নন নয়া সভাপতি নাজিরা বিবি। দুকূল রেখে তিনি বলেন, “আমি রয়েছি কংগ্রেসের সঙ্গেই। তবে সিপিএম এখনও ছাড়িনি। ছাড়বও না। দলের মধ্যেই একটি গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করব বিক্ষুব্ধরা।”