শৌচাগারে তালা, হয়রান ডোমকল

লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল সুলভ শৌচাগার। রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো ডোমকলের নানা মোড়ে দেখা মেলে সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি করা সেই সব শৌচাগারের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০০:৩৭
Share:

তালাবন্ধ শৌচাগার।—নিজস্ব চিত্র।

লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল সুলভ শৌচাগার। রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো ডোমকলের নানা মোড়ে দেখা মেলে সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি করা সেই সব শৌচাগারের। কিন্তু সেখানে ঢোকার উপায় নেই। কারণ, দরজার তালা। যেগুলিতে তালা দেওয়া নেই, সেগুলির অবস্থা এতই করুণ যে ঢোকা দায়। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর দাবি, খূুব জরুরি প্রয়োজনেও ব্যবহার করা যায় না শৌচাগার। অভিযোগ, পরিকল্পনা ছাড়াই এ ভাবে নির্মাণ করে সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা নয়-ছয় করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি। শুধু তাই নয়, নির্মাণের পরে সংরক্ষণ বা নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা রক্ষার বিষয়েও ন্যূনতম আগ্রহ দেখায় না পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি।

Advertisement

বছর দশেক আগে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের বাইরে সাত লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছিল একটি সুলভ শৌচাগার। স্নানাগার-সহ ওই শৌচাগারে সব রকমের সুযোগ সুবিধা থাকলেও তা কোনও দিন সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি। শুধু হাসপাতাল নয়, ওই এলাকায় রয়েছে বিডিওর কার্যালয়ও। প্রতিদিন হাজারও লোকের যাতায়াত। স্থানীয় বাসিন্দা আনারুল ইসলাম বলেন, “২০০৭ সাল থেকে তো এভাবেই পড়ে রয়েছে। সরকারি অর্থ ব্যয় করে এসব করার মানে কী হল? অথচ এটা চালু থাকলে হাসপাতালে রোগীদের আত্মীয়দের অনেক উপকার হত।”

প্রায় একই চিত্র ডোমকল ব্রিজ মোড়েরও। সেখানেও তৈরি করা হয়েছিল একটি সুলভ শৌচাগার। ডোমকলের প্রাণকেন্দ্র বলা যায় এই অঞ্চলটিকে। মধ্য বাজার কিংবা থানায় যেতে হয় এদিক দিয়েই। এখানে রয়েছে জমি রেজিস্ট্রেশন অফিসও। অত্যন্ত জনবহুল এই অঞ্চলের শৌচাগারটিও উদ্বোধনের কয়েদিন পরেই বন্ধ হয়ে যায়। কারণ জল নেই। কেন জল নেই, সে উত্তরও জানা নেই কারও। এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল গনি বলেন, “লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি হল শৌচাগার। কিন্তু তারপরে আর কেউ ফিরেও তাকাল না। এ বিষয়ে আজিমগঞ্জ গোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।” এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আজিমগঞ্জ গোলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসের আলম খান বলেন, “ঠিক কী কারণে ওই শৌচাগারটি বন্ধ আছে তা আমাদের জানা নেই। তবে সমস্যা থাকলে তা মিটিয়ে ফেলে জনসাধারণের জন্য ওই শৌচাগার খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’’

Advertisement

একই হাল বাজারের অন্য প্রান্ত ডোমকল রবীন্দ্রমোড় ও পুরনো বিডিও অফিস মোড়ের। ১২ বছর আগে এখানেও ঘটা করে তৈরি হয়েছিল শৌচাগার। এখনও অবশ্য তা চালু আছে। কিন্তু এতই খারাপ অবস্থা যে পারতপক্ষে কেউ সে দিকে যেতে চান না। স্থানীয় আব্বাস আলি বলেন, “সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণের বালাই নেই। মানুষের অসুবিধা তো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে চারদিকের পরিবেশ। অথচ প্রশাসনের কোনও নজর নেই।”

ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের জেসমিনা বিবি অবশ্য বলেন, ‘‘শৌচাগারগুলি কেন এতদিন ধরে বন্ধ আমার জানা নেই। বিষয়টি আগের পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা বলতে পারবেন। তবে আমার কাছে অনেকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement