রাস্তা তৈরির আদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

অবশেষে মিলল সুবিচার। তবে তার জন্য ছুটতে হল কলকাতা পর্যন্ত। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ৩ গ্রাম পঞ্চায়েতের খুলারপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় সাত কিলোমিটার রাস্তার একাংশ তৈরির কাজ বন্ধ দীর্ঘদিন। বহু তদ্বিরে কাজ না হওয়ায় সম্প্রতি বাসিন্দারা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩০
Share:

দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে রাস্তাটি। অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

অবশেষে মিলল সুবিচার। তবে তার জন্য ছুটতে হল কলকাতা পর্যন্ত।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ৩ গ্রাম পঞ্চায়েতের খুলারপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় সাত কিলোমিটার রাস্তার একাংশ তৈরির কাজ বন্ধ দীর্ঘদিন। বহু তদ্বিরে কাজ না হওয়ায় সম্প্রতি বাসিন্দারা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, চার মাসের মধ্যে ওই রাস্তা তৈরি করে দিতে।

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ১ নম্বর ব্লকের খুলারপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা ৭.৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘের একটি রাস্তা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া ওই রাস্তা আগে তৈরি হয়েছিল সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে। খুলারপুর গ্রামে কমবেশি পাঁচ হাজার লোকের বাস। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, গ্রামের বেশির ভাগ লোক বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সমর্থক হওয়ায় রাজ্য সরকার তাঁদের অংশের রাস্তা তৈরির কাজে হাত দিচ্ছে না। রাস্তা তৈরি না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার মানুষ। দুর্ঘটনাও ঘটছে।

Advertisement

জনস্বার্থে দায়ের করা মামলার আইনজীবী অয়নাভ রাহা এ দিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ভাঙাচোরা ওই রাস্তার ছবিও দেখেন। ওই আইনজীবী জানান, পুরো রাস্তার মধ্যে মাত্র ৮৫০ মিটার রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে না। কী কারণে ওই অংশের রাস্তা তৈরি হচ্ছে না, তা-ও জানাচ্ছে না জেলা পরিষদ।

সরকারি আইনজীবী চৈতালী চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, ওই অংশের রাস্তা অন্য একটি প্রকল্পে করার কথা।

প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যে প্রকল্পেই করা হোক না কেন, গ্রামের লোকের অসুবিধার কথা ভেবে চার মাসের মধ্যে ওই রাস্তা তৈরি করে দিতে হবে।

এ দিকে আদালতের এই নির্দেশের কথা শুক্রবার দুপুরে গ্রামে এসে পৌঁছতেই গোটা গ্রাম জুড়ে এখন খুশির হাওয়া। সত্তরোর্ধ্ব চাষি হাজী হাসিম শেখ বলেন, “তিন বছর আগেই তৈরি হতে পারত রাস্তাটা। তাহলে এত দুর্ভোগ পোহাতে হত না বাসিন্দাদের।” তবে চার মাসের মধ্যে রাস্তাটা হবে এতেই খুশি তাঁরা। গ্রামের বাসিন্দা সরিফা বিবি বলেন, “খুব দরকার রাস্তাটা। গ্রামের সঙ্গে আশপাশের সব এলাকার যোগাযোগ সহজ হবে। এইটুকু কথা প্রশাসনের কাউকে বোঝানো যায়নি, তবে আদালতে বুঝেছে। এই যথেষ্ট।”

মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অমলকান্তি মণ্ডল অবশ্য বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ওই গ্রামের ৮৫০ মিটার ওই সড়ক পথটি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ছিল না। গ্রামবাসিদের চাহিদা মেনে ওই রাস্তা তৈরির জন্য বাড়তি অর্থ চেয়ে পাঠানো হয়েছিল প্রকল্পের রাজ্য দফতরে। কিন্তু তারা সে অর্থ মঞ্জুর করেনি। ফলে সড়কটি তৈরি করা যায়নি। তিনি জানান হাইকোর্টের আদেশের কপি এখনও হাতে পেলেই নির্দেশ মতো কাজ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement