উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসেছে নতিডাঙা মোড়ে।
একই যাত্রা পৃথক ফল।
জায়গা নির্দিষ্ট করেও বাতিস্তম্ভ বসান গেল না করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। পূর্ত দফতরের আপত্তিতেই নাটনা মোড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাতিস্তম্ভ বসানোর কাজ।
পূর্ত দফতরের দাবি তিন রাস্তার মোড়ে ওই ভাবে বাতিস্তম্ভ বসালে অসুবিধা হবে যান চলাচলে, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। অথচ ঠিক একই পরিস্থিতিতে বাতিস্তম্ভ তৈরি হয়ে গিয়েছে করিমপুর ১ পঞ্চায়েতের নতিডাঙা মোড়ে।
বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকায় করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে করিমপুরের বেশ কয়েকটি জায়গায় বাতিস্তম্ভ বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের জ্যোৎস্না শর্মা বলেন, “আমাদের পঞ্চায়েতের সব শ্রেণির মানুষ, এলাকার জনপ্রতিনিধি, বিরোধী তৃণমূল ও পঞ্চায়েতের সকল সদস্যদের সম্মতি নিয়েই এলাকার দুটি জায়গায় উচ্চ বাতিস্তম্ভ তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পাট্টাবুকা শ্মশানে একটি বাতিস্তম্ভের কাজ প্রায় শেষ হলেও পূর্ত দফতরের বাধায় মাঝ পথেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে নাটনা মোড়ের কাজটি।”
জানা গিয়েছে, প্রতিটি বাতিস্তম্ভ তৈরিতে খরচ হবে আনুমানিক চার লক্ষ দশ হাজার টাকা। তার মধ্যে তিন লক্ষ পনেরো হাজার টাকা পাওয়া যাবে বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে। বাকি ৯৫ হাজার টাকা পঞ্চায়েত খরচ করবে রাজ্য ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের টাকা থেকে।
এ ভাবেই করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নতিডাঙা মোড়, করিমপুর বাসস্ট্যান্ড, করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেটে বসানো হয়েছে উচ্চ বাতিস্তম্ভ। তবে সেগুলির বেশির ভাগই রাস্তার পাশে। তিন রাস্তার মোড়ে বাতিস্তম্ভ তৈরি হয়েছে শুধু নতিডাঙা ও নাটনা মোড়ে। আর সেখানেই বিপত্তি। ভিত্তি তৈরি হয়ে গেলেও নাটনা মোড়ের বাতিস্তম্ভের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পূর্ত দফতর।
নদিয়া জেলা ডিভিশনের পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “এ নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ওই জায়গা দুর্ঘটনাপ্রবণ, রাস্তাও সংকীর্ণ। তাছাড়া রাস্তা তৈরির কাজও চলছে। জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব এলে খুব তাড়াতাড়ি জায়গা নির্ধারণ করে ওই বাতিস্তম্ভের কাজ শুরু হবে।”
করিমপুর বাসস্ট্যান্ডে উচ্চ বাতিস্তম্ভ।
নাটনা মোড়ে পড়ে রয়েছে ভিত্তি।
তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, করিমপুর, শিকারপুর ও বহরমপুরের এই তিন রাস্তার মোড়গুলিতেই খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচল করে। প্রতিদিনই ঘটে থাকে দুর্ঘটনা। কিন্তু বাতিস্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর তৈরি হলে যেমন আলোর ব্যবস্থা হবে, তেমনি যান নিয়ন্ত্রণেও অনেক সুবিধা হবে। অন্যান্য জায়গাতেও তাই হয়েছে। গাড়ির গতিবেগ আগের থেকে স্বাভাবিক ভাবেই কমে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য প্রয়োজনে পূর্ত দফতর ফুটপাত দখলমুক্ত করুক।
এ দিকে মাটির নীচে ভিত্তি প্রস্তর তৈরি করতে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন হঠাৎ সেটা বাতিল করা মানে সরকারের টাকা নষ্ট হওয়া। পঞ্চায়েত প্রধান জানান, করিমপুর পূর্ত দফতরের বাস্তুকার ওই ভিত্তি প্রস্থর তুলে না নিলে থানায় এফআইআর করার হুমকিও দিয়েছেন।
কল্লোল প্রামাণিকের তোলা ছবি।