বেআইনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে বিদ্যুৎ কর্তাদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকেলে খড়গ্রাম থানার দিয়ারা গ্রামের ওই ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পরেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এর জেরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিদ্যুৎ দফতরের অধস্তন কর্মীদের মনে।
ওই দিন গ্রামটিতে বিদ্যুৎচালিত সেচ পাম্পে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে মার খেয়েছিলেন খড়গ্রাম বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের কর্তারা। ওই রাতেই দফতরের পক্ষ থেকে গ্রামের পাঁচ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পরে দফতরের কান্দি বিভাগ থেকে কান্দি মহকুমাশাসকের কাছেও আর্জি জানানো হয়। বিদ্যুৎ কর্তাদের দাবি, মহকুমাশাসক অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে গ্রেফতারে পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে অধস্তন কর্মীদের ক্ষোভের বিষয়ে দফতরের কর্তাব্যক্তিরা কোনও মন্তব্য করেননি। কান্দির মহকুমাশাসক বিজিনকুমার কৃষ্ণ বলেন, “পুলিশকে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে উদ্যোগী হতে বলেছি।” কান্দির এসডিপিও সন্দীপ সেন বলেন, “অভিযুক্তরা পলাতক। তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।”
প্রসঙ্গত ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে হুকিং লাইন কাটতে গিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় দু’জন গ্রামবাসী মারাও যান। তার পর থেকে কার্যত হুকিং-ট্যাপিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান এক প্রকার বন্ধ। পুলিশও মগরাহাট কাণ্ডের পর অভিযানে যেতে রাজি হয় না। ফলে গত কয়েক বছরে রাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ চুরির বহর আরও বেড়েছে বই কমেনি।
বিদ্যুৎ বণ্টন দফতর সূত্রে খবর, এলাকার প্রায় ১০০টি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে ১০০ টাকার বিদ্যুৎ দিলে ৬০ টাকার বিদ্যুৎ চুরি হয়ে যায়। বিদ্যুৎ বিল বাবদ ঘরে আসে ৪০ টাকা। মুর্শিদাবাদ জেলায় এই অঙ্কটা গড়ে ৬৪ শতাংশ। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলাতেই বণ্টন সংস্থার শ্যালো পাম্পের বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। যা দীর্ঘ দিন ধরে গ্রাহকরা মেটাচ্ছেন না।কলকাতার বিদ্যুৎ ভবনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, হুকিং-ট্যাপিং বন্ধ করতে গিয়ে অনেক সময়ই গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে আতঙ্কে কর্মীরা অভিযানে যেতে চাইছেন না।
পুলিশের উপর মহলে বলেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামবাসীর একাংশ সরকারি বিদ্যুৎ চুরি করে শ্যালো পাম্প চালানো তাঁদের অধিকার বলে মনে করেন।