রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছিলেন শুক্রবার, তখন কলকাতা থেকে শ’কিলোমিটার দূরে নদিয়ার নবদ্বীপ কলেজের এক ছাত্রকে ‘বিজেপি করা’র জন্য শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে।
সমীর কর্মকার নামে নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজের বি কম পাশ কোর্সের প্রথম বর্ষের নিগৃহীত ওই ছাত্র বৃহস্পতিবার রাতে নবদ্বীপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। শহরে বিজেপি-র কর্মী বলে পরিচিত সমীরের অভিযোগ, “শুক্রবার পরীক্ষার রুটিন নিতে কলেজে ঢুকতেই জনা তিরিশেক টিএমসিপি সদস্য আমাকে ঘিরে ধরে অকথ্য গালিগালাজ শুরু করেন। ওরা বলে বিজেপি করি যখন, আমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।” সমীরের আরও অভিযোগ, “এক ঘণ্টা ধরে চূড়ান্ত ভাবে হেনস্থা করার পরে হাতে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে দেয় ওরা। গলায় জবার মালা পরিয়ে মারতে মারতে কলেজ এবং সামনের রাস্তায় ঘোরায়। কেউ প্রতিবাদ করেনি।” এই প্রেক্ষিতে নিরাপদে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সমীর।
কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুমিত শিকদার অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমন কোনও ঘটনার খবর আমার জানা নেই।” তবে নবদ্বীপের আইসি তপনকুমার মিশ্র জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিজেপি-র নদিয়া জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, “আমরা শীঘ্রই নবদ্বীপ কলেজে ছাত্র সংগঠন শুরু করতে যাচ্ছি। ওরা তাতে ভয় পেয়ে এই সব করছে। দেখব, অপরাধীদের ধরার ব্যাপারে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে। সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
এ দিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার বাকচা এলাকার চাঁদিবেনিয়া গ্রামে গোবিন্দ মণ্ডল ও চন্দন মণ্ডল নামে দুই বিজেপি সমর্থককে মারধর করে এলাকাছাড়া করার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার তাঁদের অনুপস্থিতিতে ওই দু’জনের বাড়ি ভাঙচুর ও পরিজনদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে পাঁচ তৃণমূল সমর্থকের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও কেউ ধরা পড়েনি। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।